মাথাভাঙা: চার ঘণ্টার ব্যবধানে গোটা দেশজুড়ে লকডাইন ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র৷ করোনা রুখতে লকডাউন ঘোষণা কার্যকরী পদক্ষেপ হলেও মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের৷ লকডাউন ঘোষণার পর কোথায় পায়ে হেঁটে, কোথাও বাস ভাড়া করে বাড়ি ফিরেছিলেন তাঁরা৷ রেলরাইন ধরে হাঁটতে গিয়েছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা কবলেও পড়তে হয় তাঁদের৷ রাতারাতি জীবিকা হারিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিতে বাধ্য হয় তাঁরা৷ কাতারে কাতারে শ্রমিকদের ঘরে ফেরার অসহায় অবস্থা দেখেছিল গোটা বিশ্ব৷ পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়েও রাজনীতি করতে ছাড়েননি ভোটলোভী রাজনৈতিক নেতারা৷ কে কত বড় শ্রমিক শ্রমিক দরদী, প্রযোগিতাও ছিল টানটান৷ শ্রমিকদের ঘরে ফেরানো নিয়ে রেল-কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত, ‘করোনা এক্সপ্রেস’ তকমা সেঁটে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক৷ কিন্তু, সেই বিতর্কের ৪ মাস কেটে গেলেও বহু শ্রমিক ঘরে ফিরলেও এখনও কাজ পাননি৷ কিন্তু, এভাবে আর কত দিন চলতে পারে? পুরোনো মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফের ভিন্ রাজ্যে কাজে যোগ দিতে যাচ্ছেন বাংলার শ্রমিকদের একাংশ৷
আগামী সপ্তাহ ধেরে শুরু হচ্ছে আনলক-৪৷ ধীরে ধীরে কলকারখানা খুলতে শুরু করেছে। দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার কাজ শুরু হয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে নিজেদের কাজের জায়গায় ফিরতে চলেছেন শ্রমিকরা৷ কোথাও আবার মালিক গাড়ি পাঠাচ্ছেন শ্রমিকদের জন্য৷ তেমনি মালিকের পাঠানো গাড়িতে তামিলনাড়ু ফিরে গেলেন মাথাভাঙার বহু শ্রমিক৷
আরও খবর-মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে গুলিবিদ্ধ নিরাপত্তারক্ষী, বাড়ছে মমতার নিরাপত্তা
বুধবার রাতে মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের ফুলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম নিমতলা এলাকার তামিলনাড়ু যেতে বাসে ওঠেন প্রায় ৯০ জন শ্রমিক। তাঁদের বাসে তুলে দিতে ভিড় করেন পরিবারের সদস্যরা। শুধু মাথাভাঙা নয়, জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের বহু জায়গায় ভিন রাজ্যের মালিকরা তাঁদের শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে গাড়ি পাঠিয়েছেন৷ দীর্ঘদিন টানাপোড়েন, কর্মহীন হয়ে বসে থাকার পর কাজে ফিরতে পেরে খুশি শ্রমিকরাও।
আরও পড়ুন- লকডাউনে গিয়েছে চাকরি, দেনার দায়ে আত্মহত্যা বারাসতের যুবকের
কয়েকঘণ্টার নোটিশে মার্চমাসে সারা দেশ জুড়ে লকডাউন হয়ে যায়। এরফলে বহু মানুষ আটকে পড়েন। সব থেকে বিপাকে পড়েন পরিযায়ী শ্রমিকরা। তাঁরা কাজ হারান। কিন্তু বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কোনও রাস্তা তাঁরা দেখতে পাননি। এই পরিস্থিতিতে কেউ কেউ পায়ে হেঁটে বাড়ির দিকে রওনা দেন। কেউ কেউ গাড়ি ভাড়া করে। সেই সময় অভিনেতা সোনু সুদ পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ান। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন নিজের রাজ্যে কর্মহীন থাকার পর ফের ভিনরাজ্যে শ্রমিকদের রওনা দিতে হচ্ছে কাজের জন্য।