কলকাতা: বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে একদিকে যেমন বড় বড় প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা চলছে, ঠিক এই আবহেই সিপিএমের একাধিক তরুণ তুর্কি নিজেদের আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন রাজনৈতিক মঞ্চে। তাদের মধ্যে অবশ্যই প্রথম সারিতে নাম আসবে নন্দীগ্রামের সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় এবং বালির সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা ধরের। তুখোড় বক্তব্য এবং সাবলীল আচরণে ইতিমধ্যেই বাংলার রাজনৈতিক মহলে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন এরা দুজন। সম্প্রতি তাদের দুজনকে নিয়ে সোশ্যাল-মিডিয়ায়-ভাইরাল হয়েছে একটি কুরুচিকর মিম। যেখানে মীনাক্ষী এবং দীপ্সিতাকে ‘কাজের মাসি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে! সেই মিম নিয়ে ইতিমধ্যেই ছিছিক্কার পড়েছে রাজ্যের সর্বত্র। দলমত নির্বিশেষে সকলেই ধিক্কার জানাচ্ছেন। এই মিম নিয়েই ইতিমধ্যেই মোক্ষম জবাব দিয়েছেন বালির সিপিএম প্রার্থী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া মিমে দেখা যাচ্ছে, একদিকে রয়েছেন বিজেপির দুই প্রার্থী প্রথা তারকা শ্রাবন্তী এবং পায়েল যাদেরকে বলা হয়েছে ‘সেক্সি বৌদি-ননদ’। পাশে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সাংসদ নুসরাত এবং মিমি, যাদেরকে বলা হয়েছে, ‘স্টাইলিশ দিদি-বোন’। তলায় সিপিএমের দুই প্রার্থী মীনাক্ষী এবং দীপ্সিতার ছবি দিয়ে লেখা রয়েছে, ‘কাজের মাসি’! এই মিম নিয় নিজের ফেসবুক পোস্টে মোক্ষম জবাব দিয়েছেন বালির সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা। তিনি লিখেছেন, ”বিজেমূল একটা মিম বানিয়েছে। আমার আর মীনাক্ষী দি-র ছবির পাশে “কাজের মাসি” লিখেছে। এখন ওরা কি ভেবে লিখেছে, কেন লিখেছে তার জবাব দেওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। কথা হলো, যে শ্রেণীর লড়াই আমরা লড়ি তাদের সাথে, তাদের দাবীদাওয়ার সাথে মানিয়ে নিতে আমাদের কখনই অসুবিধা হয় না। আমাদের নির্বাচনের সময় মমতা ব্যানার্জী-র মত মিথ্যার বেসাতি করে বলতে হয়না- “আপনার বাড়ির বাসন মেজে দেব”। গৃহপরিচারিকাদের জন্য, লকডাউনে তাদের বেতনের জন্য, তাদের সুরক্ষার প্রশ্নে দাবীদাওয়ার লড়াই বামপন্থীরা করেছে ও করবে। সব শেষে একটা কথা- “ওদের জ্বলবে, আমাদের এমনিই চলবে”।
বিজেমূল একটা মিম বানিয়েছে। আমার আর মীনাক্ষী দি-র ছবির পাশে “কাজের মাসি” লিখেছে। এখন ওরা কি ভেবে লিখেছে, কেন লিখেছে তার…
Posted by Dipsita Dhar on Sunday, 11 April 2021
অবশ্যই এই ঘটনা কেউ ভালো চোখে দেখছেন না। এই কুরুচিকর নিয়ে অধিকাংশ মানুষ চরম বিরোধিতা করছেন এবং এইভাবে ‘বডি শেমিং’ করাকে ধিক্কার জানাচ্ছেন। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে যত দিন যাচ্ছে ব্যক্তিগত আক্রমণ বেড়ে চলেছে। সেই আক্রমণের ফলে যেন একে অপরকে ন্যূনতম সম্মান দেওয়ার প্রচেষ্টা আর কেউ করছে না। অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিবেশ আরও যেন কলুষিত হচ্ছে।