বিগত বছরে এত ব্যাপক সাড়া কোনও ধর্মঘটে পাওয়া যায়নি: সেলিম

সেলিমের কথায়, বিগত বছরগুলোতে কোনো ধর্মঘটে এইরূপ ব্যাপক সাড়া মেলেনি।

কলকাতা: কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন, কর্মচারী ফেডারেশন, কৃষক সংগঠন এবং খেতমজুর সংগঠনের ডাকে আজ গোটা দেশে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বামেরা। সেই ভারত বনধ নিয়ে সকাল থেকেই বিক্ষিপ্ত অশান্তি দেখা গিয়েছে বাংলার একাধিক জেলায়। জায়গায় জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষিপ্ত অশান্তি, যানবাহন থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। তবে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের কথায়, বিগত বছরগুলোতে কোনো ধর্মঘটে এইরূপ ব্যাপক সাড়া মেলেনি। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই দাবি করেন বামেদের বর্ষিয়ান নেতা।

সেলিম ধর্মঘটের কথা বলার আগে কার্যত একহাত নেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে। জিএসটি, কৃষি বিল, দেশের অর্থনীতি সহ একাধিক বিষয়ে কেন্দ্রীয় সমালোচনা করেন তিনি। সেলিম জানান,গোটা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ এবং রাজ্যের সমস্ত জেলায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ এই বনধকে সমর্থন করেছেন। সেই অনুযায়ী ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। এই কথা বলতে গিয়ে তিনি তৃণমূল এবং বিজেপিকে একহাত নেন। বলেন, এই দুটো দলের কিছু নাটক দেখাও গেছে, কিন্তু সকল মানুষের যে মেজাজ ছিল তা গোটা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও ধরা পড়েছে। এর পাশাপাশি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করে সেলিম বলেন, এই বছরে কেন্দ্র শুধু অপদার্থতা দেখিয়েছে, যাদের কাজ দেওয়ার ছিল তারা পাননি, উল্টে যাদের কাজ ছিল তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। দিনদিন অর্থনীতির অবস্থা আরো খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে। সেলিম মন্তব্য করেন, বিগত বছরগুলোতে কোন ধর্মঘটে এইরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। আজকের ধর্মঘটের চেহারা দেখে বিজেপি এবং তৃণমূল উভয় দল ভয় পেয়েছে। এই প্রেক্ষিতে মহম্মদ সেলিম বলেন, আজকের এই ধর্মঘটের মূলত নতুন প্রজন্ম অনেক বেশি অংশগ্রহণ করেছে, তাদের তিনি লাল সেলাম জানান। কিন্তু তৃণমূল সরকারের ধর্মঘট সমর্থকদের উদ্দেশে পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছে, তাদের আটকানোর প্রবল চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি। আজকের বনধ মূলত ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। তাদের একাধিক নীতি এবং ঘোষণা যেগুলো পূর্ণ করা হয়নি তার বিরোধিতায় আজকের এই ধর্মঘট পালন, এমনটাই জানান তিনি।

সেলিম আরো বলেন, কেন্দ্রের নতুন কৃষি বিল আদতে কৃষকদের বিরোধী। কেন্দ্রে তরফে বারবার বলা হচ্ছে, এক দেশ, এক রেশন, এক দেশ, এক কর। কিন্তু কৃষকদের ক্ষেত্রে নিয়ম সম্পূর্ণ আলাদা। তাদের কেন অন্যান্য রাজ্যের যেতে দেওয়া হবে না, প্রেক্ষিতে নয়া কৃষিবিদের প্রসঙ্গ টেনে আনেন সেলিম। তাঁর কথায়, কেন্দ্রের নয়াকৃষি বিল যদি কৃষকদের জন্য হয়ে থাকে তাহলে অন্যান্য রাজ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রে কৃষকদের আটকানো হচ্ছে কেন। কেন হরিয়ানার কৃষক দিল্লিতে যেতে পারবে না, কেন পঞ্জাবের কৃষক হরিয়ানায় আসতে পারবে না, প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রকে একহাত নেন তিনি। একইসঙ্গে দাবি করেন, রাষ্ট্রয়ত্ত সম্পত্তি বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়ে পুরোদমে কাজ করছে কেন্দ্র। পশ্চিমবাংলাতে ও একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পত্তি বিক্রি করার প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। ব্যাঙ্কিং সেক্টরের সর্বনাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × two =