নিজস্ব প্রতিনিধি, বনগাঁ: নাগরিকত্ব আইন বা সিএএর প্রয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের ওপর ক্ষুদ্ধ বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর৷ রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ঠাকুরনগরে রাস উৎসব ও সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের নতুন কমিটি গঠন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন বিজেপি সাংসদ৷ একইসঙ্গে এদিন বিজেপি সহ সমস্ত দলকে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিলেন শান্তনু ঠাকুর l একইসঙ্গে অস্বস্তি বাড়ালেন গেরুয়া শিবিরের৷ শান্তনুর কথায়, ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ শাসন করার ক্ষমতা আছে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় মানুষের l মতুয়া সম্প্রদায় মানুষ সিএএ লাগু না হলে যা বলবে আমরা সেটা করব l মতুয়া মহাসংঘ কোন রাজনৈতিক দলের পদলেহন করে না l
এ দিন মতুয়া ভক্তেরা অনেকে হাজির হয়েছিলেন ঠাকুরবাড়িতে। কিছু ভক্ত শান্তনুর কাছে লিখিত ভাবে দাবি জানান, দ্রুত নাগরিকত্ব আইন চালু করা হোক। এদিনের মঞ্চ থেকে শান্তনু বলেন, ‘‘কেন নাগরিকত্বের জন্য আমাদের ভিক্ষা চাইতে হচ্ছে বার বার? কেন আন্দোলন করতে হচ্ছে বার বার? কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল, বিজেপি— সকলের কাছে আমরা ভিক্ষা চেয়েছি। অধিকার কেউ দেবে না। অধিকার আদায় করে নিতে হবে।’’
শান্তনু আরও বলেন, ‘‘রাজনৈতিক লোকেরা আমাদের পিছিয়ে রেখেছেন। যদি সুযোগ আসে, দেখাব, রাজনৈতিক ময়দান দখল করার ক্ষমতা কাদের আছে। কোনও রাজনৈতিক দলের কথা মতো আমরা চলব না। কিছু দিন আরও অপেক্ষা করব। তার পরেও নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ না হলে মতুয়ারা তাঁদের মতো ভাববেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মতুয়াদের যদি মাছের চার দেওয়া হতে থাকে, তাতে আগামী দিনে মতুয়ারা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে আমি মতুয়াদের কথাই শুনব। থোড়াই রাজনীতির কথা শুনব! আমাদের নিয়ে যারা রাজনীতি করছে, তাদের লাভ হবে না।’’ ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, বর্ণবাদকে তোষণ করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলি গঠিত হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, মতুয়াদের নাগরিকত্বের অধিকারের জন্য নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ছিলেন শান্তনু ঠাকুর। মতুয়াদের কাছে প্রতিশ্রুতি ছিল সাংসদ হয়ে মতুয়াদের নাগরিকত্বের সমস্যা মেটাবেন। কিন্তু বাস্তবে সংসদ থেকে নাগরিকত্ব আইন পাশ হলেও এখনও লাগু হয়নি সেই আইন। আর তাতেই চটেছেন মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এদিনের অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে তা সাফ বুঝিয়ে দিলেন তিনি৷ একুশের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে শান্তনুর গলায় বিদ্রোহের সুর৷ আর তাতেই চরম অস্বস্তিতে পড়েছে বঙ্গের গেরুয়া শিবির৷