“মনটা ছটফট করে..’‘বাঁচতে পারব না’, এখনও রিয়া ও অনন্যার জন্য মন কাঁদে ওঁদের

“মনটা ছটফট করে..’‘বাঁচতে পারব না’, এখনও রিয়া ও অনন্যার জন্য মন কাঁদে ওঁদের

17c29530da8000f69c9393e7ca2b2fd5

হাওড়া: ভালোবেসেছিল ওঁরা৷ কিন্তু ওঁদের অপরাধ ছিল ওঁরা রাজমিস্ত্রী৷ সেই কারণেই কি ওঁদের হাত ছেড়েছে রিয়া ও অনন্যা? ভালোবাসার মাশুল কড়ায় গণ্ডায় মেটাচ্ছে মুর্শিদাবাদের দুই রাজমিস্ত্রি শেখর রায় এবং শুভজিৎ দাস। জেল মুক্তি ঘটলেও খোঁজ নেই অনন্যা-রিয়ার৷ কিন্তু জীবনে কিছু করে দেখানোর জেদ বদলে দিয়েছে ‘প্রেমিক’ শুভজিৎ-এর জীবন৷ তিনি এখন আর রাজমিস্ত্রী নন৷ নামী বিড়ি কোম্পানীর কর্মী৷ মোনা মাইনের চাকরি৷ রয়েছে পিএফ, মেডিক্যাল ইনস্যুরেন্স৷ মেলে বোনাস৷ কিন্তু, রিয়ার জন্য এখনও মনটা অস্থির করে ওঁর৷ অকপট শুভজিৎ৷ 

আরও পড়ুন- আবেদনের ভিত্তিতে পৌঁছে যাবে টিকা, স্পষ্ট করলেন ফিরহাদ

গত বছর ডিসেম্বর মাসের ঘটনা৷ দুই রাজমিস্ত্রীর হাত ধরে হাওড়ার দুই গৃহবধূর প্রেম ও ঘরছাড়ার খবর রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল৷ এক সময় মুর্শিদাবাদের দুই যুবক গলা ফাটিয়ে বলেছিল, ‘‘রাজমিস্ত্রী বলে কি আমাদের মন নেই! আমরা কি ভালোবাসতে পারি না? আইন মেনেই প্রেমিকাদের বিয়ে করত চাই৷’’ কিন্তু যাঁদের জন্য এত প্রেম, তাঁরাই তো হাত ছেড়েছে৷ যাঁদের কাছে নিজেদের প্রেম সমর্পণ করেছিলেন শুভজিৎরা, তাঁরাই আর যোগাযোগ রাখ না৷ নিজেদের সিম কার্ড বদলে ফেলেছেন বালির নিশ্চিন্দার কর্মকার বাড়ির দুই বধূ ৷

এই দু’মাসে অনেকটা বদলে গিয়েছে শুভজিৎ আর শেখরের জীবন৷ আদালতের চক্কর কাটতে কাটতে হাঁফ ধরেছে৷ তার উপর এই ঘটনার পর রাজমিস্ত্রীর কাজও পাচ্ছিলেন না৷ পরে রাজমিস্ত্রীরর কাজ ছেড়ে বিড়ি কারখানায়  যোগ দেন শুভজিৎ৷ শেখর অবশ্য ফের রাজমিস্ত্রীর কাজই শুরু করেছে৷ তবে রিয়া-অনন্যাকে ছেড়ে কেমন আছে ওঁরা? 

শুভজিৎ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এই ঘটনার পর কেউ রাজমিস্ত্রীর কাজ দিত না। কিন্তু, জীবনে যে উন্নতি করতে হবে সেটা ঠিক করে নিয়েছিলাম। একটা বিড়ির কোম্পানিতে ভালো বেতনে কাজ পেয়েছি। সখানে অনেক সুযোগ সুবিধাও রয়েছে৷ আগের থেকে অনেক ভালো রোজগার।” জীবনের উন্নতি হলেও ভালোবাসা ফিরছে কি? আক্ষেপের সুর শুভজিৎ বলেন, “ওঁর নতুন নম্বর আমার কাছে নেই। শুনেছি এখন মায়ের বাড়িতে রয়েছে। আমাদের গ্রামের একটি ছেলে ওঁদের বাড়ির পাশেই কাজ করতে গিয়েছে। ওঁকে অনেক বার দেখেছে৷ তবে আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না।” শুভজিৎ বলেন, রিয়া যদি ফিরে আসে, তাহলে তাঁকে মেনে নেবে তাঁর পরিবার৷ তিনি আরও বলেন, “প্রথমে শেখর প্রেম করত। অনন্যা-শেখর ছিল আমার হেড। এরপর আমার জীবনে রিয়া আসে।”

শেখর জানান, পেশা বদল না করলেও, এখন আর সে ভাবে কাজ পান না৷ অনন্যার সঙ্গেও যোগাযোগ নেই তাঁর৷ শেখরের কথায়, ” অনন্য ৪টে সিমকার্ড বদলে ফেলেছে। ওঁর সঙ্গে একবার যদি যোগাযোগ করতে পারতান, ভালো হত। ওঁর জন্য আমার মন এখনও অস্থির হয়ে ওঠে। মন ছটপট করে। এতটাই ভালোবেসে ফেলেছি যে বাঁচতে পারব না।”

গত বছর ১৫ ডিসেম্বর মাসে শীতের পোশাক কিনতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন নিশ্চিন্দার কর্মকার বাড়ির দুই গৃহবধূ রিয়া ও অনন্যা। সঙ্গে ছিল রিয়ার সন্তানও। এর পর থেকে আর তাঁদের হদিশ মেলেনি৷ পরে রিয়া ও অনন্যার ফোন ট্র্যাক করে তাঁদের খোঁজ পায় পুলিশ৷ জানা যায়, শুভজিৎ আর শেখরের সঙ্গে পালিয়েছিলেন তাঁরা৷ এর পরেই শুভজিৎ ও শেখরের নামে একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের করে ওই গৃহবধূদের পরিবার।