কলকাতা: নয়া বছর পড়তে না পড়তেই করোনা ভাইরাস নিয়ে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর নাম থেকে যে আশঙ্কার আবহ তৈরি হয়েছিল এখন তা-ই ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। দেশের কোভিড পরিস্থিতি আবার আগের পর্যায়ে ফিরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে কারণ দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে হু হু করে। একই রকম হাল পশ্চিমবঙ্গের। এখানেই বিগত কয়েক দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই সংক্রমণে লাগাম টানতে কড়া বিধিনিষেধ আবার লাগু করেছে সরকার। কিন্তু যা হওয়ার তা হয়তো হয়ে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতি যে, রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সঙ্কটের মুখে চলে আসার অবস্থা, কারণ এখন আক্রান্ত হচ্ছেন বিরাট সংখ্যক চিকিৎসক ও চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্তরা। এই পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকে বসেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
আজ স্বাস্থ্য ভবনে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং শিক্ষা-স্বাস্থ্য অধিকর্তা। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরাও। এছাড়াও বিভিন্ন মেডিক্যেল কলেজে অধ্যক্ষরাও এই বৈঠকে সামিল হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি যোগ দিয়েছেন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষরা। বিগত ২-৩ দিনে অনেক চিকিৎসক কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের দ্রুত কী ভাবে সুস্থ করে তোলা যায় সেই আলোচনাই এই বৈঠকে হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কারণ চিকিৎসকরা এইভাবে আক্রান্ত হতে শুরু করলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, এমন বড় আশঙ্কা তৈরি হয়। এক্ষেত্রে কয়েকটি দল ভাগ করে আলাদা আলাদা শিফট করে চিকিৎসা পরিষেবা চালু রাখার প্রাথমিক ভাবনা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যারা হাসপাতালে আসছেন, তারা যাতে কোনও ভাবেই হয়রানির শিকার না হন, তার দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য ভবন জানিয়েছে যে, যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তারা হোম আইসোলেশনে আছেন, এবং প্রত্যেকের মৃদু উপসর্গ।
এদিকে, রাজ্যের একমাত্র সরকারি চক্ষু হাসপাতালেও করোনা থাবা বসিয়েছে বলে খবর। কলকাতা মেডিক্যেল কলেজের রিজিওনাল ইন্সটিটিউট অফ অফথ্যালমোলজির ১২ জন চিকিৎসক। অন্যদিকে, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগী-সহ মোট ৬১ জন কোভিড পজিটিভ হয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। চিত্তরঞ্জন শিশু সেবা সদন, আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ থেকেই আগেই ভাইরাস আক্রান্তের খবর এসেছিল। বিগত ৩-৪ দিনেই রাজ্যের করোনা গ্রাফ হু হু করে বেড়েছে। একলাফে সংক্রমণ ২ হাজার, ৩ হাজার হয়ে গিয়েছে। কলকাতায় তো সবথেকে বেশি। তথ্য বলছে, বিগত ছয় দিনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় প্রায় ১৫ গুণ বেশি বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে রাজ্যে। তাই এখন আরও উদ্বেগ বাড়ছে। আজই আবার কলকাতা বিমানবন্দরে ২ জনের করোনা ধরা পড়েছে। সুইডেন ফেরত একজন মহিলা এবং একজন পুরুষ কোভিড পজিটিভ।