কলকাতা: এবার নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করল জাতীয় কংগ্রেসও। সোমবার দুপুরে বিধানভবনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী মোট আটটি বিষয়কে সামনে রেখে সাদামাটা নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করলেন। তৃণমূল বা বিজেপি মতো ঘটা করে বিশাল লম্বা ইশতেহার না তৈরি করে ছোটখাটো ও সহজ সরল ২ পাতার ঘোষণাপত্র সামনে আনল কংগ্রেস। পাশাপাশি, রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় কংগ্রেসের ঘোষিত প্রার্থী তালিকা বিরুদ্ধে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখানো নিয়েও মন্তব্য করলেন অধীর চৌধুরী।
মুর্শিদাবাদ জেলার নওদায় সংযুক্ত মোর্চার সমর্থনে সিপিআইএম প্রার্থী নির্বাচনে লড়বেন। কিন্তু জোটের এই সিদ্ধান্ত পছন্দ হয়নি স্থানীয় কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের। তাই সিপিআইএমের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন রকমভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন নওদার কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। একই অভিযোগ করা হয়েছে জোড়াসাঁকো ও ভবানীপুর এলাকার কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। তবে এই ক্ষোভ-বিক্ষোভকে খুব একটা নেতিবাচক হিসেবে ধরছেন না প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তিনি জানিয়েছেন, “কংগ্রেস শুধু না, বিক্ষোভ তো বামেদের মধ্যেও হচ্ছে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ আছে তার তুলনায় কংগ্রেসের ক্ষোভ-বিক্ষোভ খুবই যৎসামান্য। তৃণমূল ও বিজেপির অভ্যন্তরে প্রার্থী বাছাই নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে।”
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মতে, “কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা পছন্দ না হওয়া নিয়ে দলের এত বছরের ইতিহাসে কোনও নিদর্শন নেই। আমরা সেই ইতিহাসকেই অনুসরণ করে চলার পরিপন্থী।” তবে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের এই ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখানোর পিছনে যে কারণ রয়েছে তা অস্বীকার করেননি অধীরবাবু। স্পষ্ট জানিয়েছেন, “ক্ষোভ-বিক্ষোভ যে একেবারেই নেই তা আমি অস্বীকার করবো না। ক্ষোভ আছে এবং ক্ষোভের কারণও আছে। আমাদের আসন সংখ্যা এতই সীমিত যে তার মধ্যে আমরা সকলকে টিকিট দিতে পারিনি। আমরা ইচ্ছা করলেই একজনকে এক জায়গা থেকে না দাঁড় করিয়ে অন্য জায়গা থেকে দাঁড় করাতে পারিনি। এজন্য দলের বহু যোগ্য প্রার্থীকে টিকিট পাননি।”
তবে দলের মধ্যে এই ক্ষোভ-বিক্ষোভকে যথেষ্ট ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছেন অধীর। তার বক্তব্য, “এই ক্ষোভ-বিক্ষোভ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, মানুষের মধ্যে কংগ্রেস দলের প্রার্থী হওয়ার চাহিদা একেবারে তুঙ্গে। আর তা থেকে এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষের মনে আশা-প্রত্যাশা ক্রমশ বাড়ছে। কংগ্রেসের মতো একটি দলের টিকিট পাওয়ার জন্য মানুষের মধ্যে এত অশেষ চাহিদা আমি এর আগে কখনও দেখিনি। এটা খুব ভালো লক্ষণ।”