প্রধানমন্ত্রীর সামনে অপমান! রাজনীতিতেই জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি মমতার

প্রধানমন্ত্রীর সামনে অপমান! রাজনীতিতেই জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি মমতার

কলকাতা: নেতাজির ১২৫ তম জন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে রাজনৈতিক তরজার সাক্ষী থেকেছে পশ্চিমবঙ্গ, তা সাম্প্রতিক সময়ের প্রেক্ষিতে নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন।  কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপাল তথা সরকারি আমলা মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে পালিত হয় নেতাজি জয়ন্তী। কিন্তু বাংলার প্রাক-নির্বাচনী রাজনৈতিক উত্তাপের আঁচ থেকে রেহাই পায়নি এই জাতীয় উৎসবও।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে মুখ্যমন্ত্রীর অপমানকে কেন্দ্র করে গত দু’দিন ধরেই তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। এবার এক দলীয় জনসভা থেকে সেই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে অসম্মান করার ফল ভুগবে গেরুয়া শিবির, দিলেন সেই হুঁশিয়ারিও।

এদিন হুগলির পুরশুড়ায় এক জনসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২৩ জানুয়ারির পর এটাই ছিল তাঁর প্রথম জনসভা। নেতাজি জয়ন্তীর ঘটনা নিয়ে সেখান থেকেই বিজেপিকে এক হাত নিয়েছেন তিনি। জাতীয় উৎসবে জয় শ্রী রাম স্লোগান তোলায় গেরুয়া সমর্থকদের তিনি ‘‌উগ্র’‌, ‘‌ধর্মান্ধ’‌, ‘‌গদ্দার’‌ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায় ‘‘আপনারা কি আমাকে বাড়িতে ডেকে বলবেন এক থাপ্পড় মারব, বেরিয়ে যাও এখান থেকে? বলবেন না তো? এটা আমাদের রীতি নয়।’’

প্রধানমন্ত্রীর সভায় আমন্ত্রণ করে তাঁকে অপমান করা হয়েছে, এই অভিযোগে নেতাজি জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে মঞ্চে উঠেও বক্তব্য রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী। সেদিন বক্তৃতার জন্য তাঁকে আহ্বান করা হলে পিছন থেকে একদল জনতা ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিয়ে ওঠে। এতেই ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। জাতীয় উৎসবে ধর্মীয় তথা রাজনৈতিক স্লোগানের তীব্র বিরোধিতা করেন তিনি। এদিনের সভা থেকে সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘নেতাজি আমাদের দেশের নায়ক। তাঁর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গেলাম। আর এত বড় সাহস যে কয়েকটা উগ্র ধর্মান্ধ গদ্দার আমাকে টিজ করল। তাও দেশের প্রধানমন্ত্রীর সামনে!‌’’ সেদিনের অনুষ্ঠানে বিজেপি সমর্থকরা যদি নেতাজির নামে স্লোগান দিতেন তবে তিনি খুশি হতেন বলেও জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে শুধুমাত্র বিজেপির সমালোচনা করেই ক্ষান্ত থাকেননি তৃণমূল নেত্রী। রাজনীতির মাধ্যমেই অপমানের জবাব দেবেন, বলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা আমায় চেনে না। যদি কেউ বন্দুক দেখায় তা হলে আমি বন্দুকভরা সিন্দুক দেখাব। কিন্তু আমি বন্দুকে বিশ্বাস করি না, রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। রাজনীতি দিয়ে আমি এর জবাব দেবোই।’’ মমতার এই হুঁশিয়ারি নিঃসন্দেহে নির্বাচনের আগে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন করে যোগ করেছে উত্তাপ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *