মুখ্যমন্ত্রী বলছেন দূরত্ব রাখতে, টিটাগড়ে বিধি উড়িয়ে ‘শান্তি মিছিল’ তৃণমূলের!

মুখ্যমন্ত্রী বলছেন দূরত্ব রাখতে, টিটাগড়ে বিধি উড়িয়ে ‘শান্তি মিছিল’ তৃণমূলের!

 

কলকাতা: করোনা নিয়ে বারবার সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বারবার বলছেন, ভিড় এড়াতে চলতে৷ বলছেন মাস্ক পরতে৷ নিয়ম মেনে চলার জন্যও করছেন আর্জি৷ কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী নিজে যখন ভিড় এড়িয়ে চলতে বলছেন, ঠিক তখন করোনা বিধি লাটে তুলে তাঁর দলের নেতারা করছে শান্তি মিছিল৷ দূরত্ববিধি তো দূর, ঠিকঠাক মাস্ক পরা নিয়েও রয়েছে নানান প্রবণতা৷ আর তাতেই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে সাধারণের মধ্যে৷ তাহলে কি সব সতর্কতা সাধারণের জন্য? তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের জন্য নয়?

আজ নবান্ন থেকে করোনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী৷  করোনা সংক্রমণ ভাবিয়ে তুলছে। প্রচুর প্লেন, ট্রেন, লরি আসছে সেইসঙ্গে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। কলকাতা থেকে ইউরোপ উড়ান চালু করার আবেদনও রাখেন তিনি৷ সমস্ত প্রোটোকল মেনে এই উড়ানগুলি টানা চালানোর কথা বলেন তিনি। মানুষকে তিনি বারবার সচেতনতার বার্তা দেন মমতা৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই বিধিনিষেধকে প্রায় বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কাতারে কাতারে মানুষ নিয়ে মিছিল বের করলেন তৃণমূল নেতারা৷ টিটাগড় থেকে বারাকপুর চিড়িয়া মোড় পর্যন্ত এই মিছিলকে ‘শান্তি মিছিল’ বলে দাবি করছেন তৃণমূল নেতা কর্মীরা৷ মিছিলে উপস্থিতি ছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতা ফিরহাদ হাকিম, সদ্য করোনা মুক্তি হওয়া জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক৷  মণীশ শুক্লার খুনের পর এলাকায় রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমেই বেড়ে  চলেছে৷ সেই উত্তেজনা প্রশমনেই এই মিছিল বলে দাবি তৃণমূলের৷ কিন্তু, সেই শান্তি মিছিলে উধাও করোনা বিধি৷ লাটে দূরত্ব বিধির তত্ত্ব৷

এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা ফেরাতেই এই মিছিল বলে দাবি করেছে তৃণমূল৷ গোটা মিছিলে ছিল ড্রোনের নজরদারিতে৷ মিছিলের উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন নেত্রীর নির্দেশ কিন্তু এদিন প্রায় উড়িয়েই দিলেন মিছিলে যোগ দেওয়া দলের নেতা কর্মীরা৷ বিন্দুমাত্র মানলেন না করোনা সতর্কতা৷ কারো মুখে মাস্ক আছে তো কারো মুখে মাস্ক নেই৷ দূরত্ববিধি তো প্রায় শিকেয় তুলে গায়ে গায়ে হেঁটে মিছিলে সামিল হলেন তাঁরা৷

প্রশ্ন উঠছে, এরকম আবহে কীভাবে এত মানুষ নিয়ে মিছিলের অনুমতি পেলেন তৃণমূল নেতারা? নাকি শাসকদল হওয়ার ফায়দা তুললেন তাঁরা৷ এদিকে বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের শক্তি ঝালিয়ে নিতে ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছে সবদল৷ বারাকপুর শিল্পাঞ্চলও তার বাইরে নয়৷ রাজনৈতিক মহলের দাবি এই মিছিলকে তাদের শক্তিপ্রদর্শনের হাতিয়ার করে এদিন মাঠে নেমেছিল তৃণমূল৷ এদিকে বিজেপির পক্ষ থেকেও এই মিছিলের পাল্টা মিছিলের কথা ঘোষণা করা হয়েছে৷ শুক্রবার সেই মিছিল হবে, নাম দেওয়া হয়েছে হল্লা বোল ব়্যালি৷ তবে, সেই মিছিলেও যে দূরত্ববিধি লাটে উঠবে, তা একপ্রকার নিশ্চিত৷ কারণ, নেতার খুনের প্রতিবাদে দফায় দফায় হওয়ার একধিক মিছিলে ছিল না কোনও দূরত্ববিধি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × four =