নন্দীগ্রাম: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে ভোটে লড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! এ দিন তেখালির সভা থেকে কার্যত ঘোষণা করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এ দিন জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, নন্দীগ্রাম তাঁর জন্য প্রচন্ড লাকি জায়গা। তিনি তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে অনুরোধ জানাবেন নন্দীগ্রামের জন্য যেন তাঁর নাম রাখা হয়। নন্দীগ্রাম থেকেই আগামী নির্বাচনে লড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নন্দীগ্রামের সঙ্গে তাঁর আত্মার টান রয়েছে। তুমি অবশ্যই চাইবেন এখানে ভালো প্রার্থী দিতে। যদিও তিনি এই বিষয়ে এখনও ঘোষণা করছেন না। কিন্তু তিনি যদি নন্দীগ্রাম থেকে নির্বাচনে লড়েন তাহলে কেমন হয়, এই প্রশ্ন জনতার দরবারে ছুড়ে দেন মমতা। তারপরেই বলেন, তিনি ভাবছিলেন, কারণ তাঁর একটু ইচ্ছে হল। নন্দীগ্রাম তাঁর মনের কাছের জায়গা, তাঁর ভালবাসার জায়গা। তাই তিনি এখান থেকে লড়তে চান। এই প্রসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, ভবানীপুরেও তিনি ভালো প্রার্থী দেবেন, কারণ সেটাও তাঁর ভালবাসার জায়গা। এই প্রসঙ্গে তিনি সুব্রত বক্সীকে অনুরোধ জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের জন্য তাঁর নাম রাখার জন্য। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, নন্দীগ্রামে ভোটে দাঁড়াতে তিনি হয়তো এখানে বেশি আসতে পারবেন না কারণ তাকে বাকি বিধানসভা কেন্দ্রের নজরদারি করতে হবে। কিন্তু তিনি ভোটে জেতার পরে সব কাজ করে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি সেখানকার কর্মী এবং সমর্থকদের বলেছেন তারা যেন নির্বাচনের সময় সব কাজ করে দেয়, নির্বাচনের পর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে নেবেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে স্লোগান তোলেন তৃণমূল সুপ্রিমো, “নন্দীগ্রাম দিচ্ছে ডাক, বিজেপি নিপাত যাক”। এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুব্রত বক্সীকে যে অনুরোধ জানিয়েছেন তা দল গ্রহণ করেছে বলে সঙ্গে সঙ্গেই মঞ্চে থেকে জানিয়ে দেন তিনি। একইসঙ্গে এ দিন মমতা মনে করিয়ে দেন, কেউ কেউ ইধার উধার করছে, তবে তাতে চিন্তার কোন কারণ নেই। এই প্রেক্ষিতে কর্মী এবং সমর্থকদের অভয় দিয়েছেন তিনি। এদিন মমতা জানান, ২৬ দিন অনশন করার পর তিনি প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে তাঁর দুটো অপারেশন হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে বেরোনোর পর তিনি জানতে পারেন নন্দীগ্রামে গুলি চলছে। চিকিৎসকদের বাধা না শুনে নন্দীগ্রামে আসছিলেন তিনি। সেই সময়ে কোলাঘাটের কাছে তাঁকে পেট্রোল বোমা দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে এ দিন জানান মমতা। একই সঙ্গে বলেন, তৎকালীন রাজ্যপাল তাঁকে ফোন করে সতর্ক করে বলেছিলেন, তিনি যাতে সেখান থেকে ফিরে আসেন কারণ তাঁকে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে। এককথায় নন্দীগ্রামে যেতে নিষেধ করেছিলেন রাজ্যপালও। কিন্তু তিনি সেদিন কারুর কথা শোনেননি বলে এ দিন স্পষ্ট করেন মমতা। এই প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, তেখালিতে গুলি চলেছিল, আর এই নন্দীগ্রামের সঙ্গে তাঁর আত্মার টান। সেদিনের রক্তস্নাত দিনগুলো কখনোই ভুলতে পারবেন না বলে জানান তৃণমূল সুপ্রিমো।