আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ক্ষমতা নেই আমাদের, কেন্দ্রের কাছে জবাব চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী

আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ক্ষমতা নেই আমাদের, কেন্দ্রের কাছে জবাব চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী

কলকাতা: আলু-পেঁয়াজের দাম আকাশ ছোঁয়া৷ অথচ নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা নেই৷ কী খাবে গরিব মানুষ? কেন্দ্রকে ফের একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অত্যাবশ্যক পণ্যগুলির মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতি মাসে নিয়ম মাফিক বৈঠক করত রাজ্য সরকার৷ দাম বেশি বাড়লে ভর্তুকিও দেওয়া হত৷ সুফল বাংলার মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজি তো বটেই মাছও বিক্রি করা হত৷ এখনও খানিকটা করা হচ্ছে৷ কিন্তু মূল্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার রাজ্যের হাত থেকে কেড়ে নিয়েছে কেন্দ্র৷ যার মাশুন গুণতে হচ্ছে আম জনতাকে৷   

আরও পড়ুন- দিল্লির পুলিশ এনে বাংলায় অভিযান কেন? অমিত শাহকে চরম হুঁশিয়ারী মমতার

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা প্যান্ডেমিক শুরুর আগে ৪০ হাজার মেট্রিক টন আলু সংগ্রহ করে রাখা হয়েছিল৷ সেই সঞ্চয় থেকে এখনও ২৫ টাকা কেজি দরে সুফল বাংলায় আলু দেওয়া হচ্ছে৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যে আইন প্রবর্তন করেছে তাতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অধিকার রাজ্যের হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে৷ উদ্বেগের বিষয় হল, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আলু-পেঁয়াজের দামের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে না কেন্দ্রীয় সরকার৷ রাজ্যকেও নিয়ন্ত্রণ করতে দেওয়া হচ্ছে না৷ ফলে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে৷ যে যেমন পারছে ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছে৷ তিনি আরও বলেন, বাংলা এমন একটা রাজ্য যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার চাষীদের থেকে চাল কেনে না৷ ফুড ডিপার্টমেন্ট সরাসরি চাষীদের থেকে চাল কিনে তা মজুত করে৷ এতে চাষীরা সঠিক দাম পান৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার গায়ের জোড়ে একের পর এক বিল আনছে৷ বিনা ভোটিংয়েই তা পাশ করা হচ্ছে৷ এর ফলটা ভুগছে মানুষ৷ এর জবাব দেবে কে? 

আরও পড়ুন- বিজেপি ছেড়ে গুরুং-এর ঘরে ফিরল দার্জিলিংয়ের ১৭ কাউন্সিলর, বদলার হুংকার মোর্চা সুপ্রিমোর

বিজেপি’র বক্তব্যের রেশ ধরেই এদিন তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তো উপড়ে ফেলে দেওয়া হবে৷ সে তো বুঝলাম৷ আলু-পেঁয়াজের যে এত দাম বাড়ছে৷ আপনাদের কে উপড়ে ফেলবে? সেটা আগে দেখুন৷ মানুষ কী খাবে? এটা দেখার দায়িত্ব কার?’’ এদিনের রিভিউ বৈঠকের পর কেন্দ্রকে চিঠি পাঠানো হবে বলেও জানান  তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে ভাবে আলু-পেঁয়াজের দাম লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলেছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য৷ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণ করার মতো কেউ নেই৷ হয় রাজ্যের হাতে ক্ষমতা মূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হোক, না হলে নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে নিয়ন্ত্রণ করুক৷ রাজ্যের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হলেও বিপণন ও কৃষি বিভাগকে কোথায হোর্ডিং হচ্ছে সেই খবর নেওয়ার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের আইনের ফলেই হোর্ডিং বেড়ে গিয়েছে৷ বাজার থেকে সবজি উধাও৷ বাজারেও আলু-পেঁয়াজ নিয়ে প্যান্ডেমিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ কালোবাজারিকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্যই এই আইন এনেছে কেন্দ্র৷ যা সম্পূর্ণ জনবিরোধী৷ মানুষ যাতে ন্যায্য দামে সবজি পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে কেন্দ্রকে৷  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × two =