গোঘাট: রাত পোহালেই দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোটগ্রহণ। মঞ্চ এবার নন্দীগ্রাম। সম্মুখ সমরে মমতা-শুভেন্দু-মীনাক্ষী। গত কয়েকদিন থেকেই নন্দীগ্রামে ঘাঁটি গেড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার পর্যন্ত গোটা নন্দীগ্রামে প্রচার করে তৃণমূল সুপ্রিমো বুধবার গেলেন হুগলির গোঘাটে। সেখানে জনসভা করে মঞ্চ থেকে একের পর এক চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন বিজেপিকে। মেজাজ হারিয়ে দিলেন হুমকি, “অত বাড়াবাড়ি করতে যেও না। ইলেকশন যাক তারপর দেখে নেব।” দিলেন উন্নয়নের খতিয়ানও।
বুধবার গোঘাটের জনসভায় থেকে নতুন প্রকল্পের আশ্বাস দেন মমতা। তিনি বলেন, “গোঘাটের অন্যতম বড় সমস্যা বন্যা। এই জন্য আমরা আরামবাগ মাস্টার প্ল্যান তৈরি করছি। ৫৪ কিলোমিটার খাল সংস্কার হবে এই প্রকল্পে। খরচ হবে ৪০ কোটি টাকা। এছাড়াও যত নিচু জায়গা আছে সব আমরা সংস্কার করছি। এটা হয়ে গেলে গোঘাটের মানুষকে আর বন্যার সমস্যায় ভুগতে হবে না।” বিজেপিকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, “সোনার বাংলা বানাবে। আজ পর্যন্ত ঠিক করে বাংলা বলতে পারেনি, বঙ্গাল বলে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের নাম বাংলা করেনি। আমি কতবার আবেদন করেছি। ওরা বাংলাকে ঘৃণা করে। বাংলা নামকে ঘৃণা করে।”
সিপিআইএম ও বিজেপিকে একসঙ্গে আক্রমণ করে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “সিপিএমের হার্মাদরাই আজ বিজেপি। সিপিএম থেকে বিজেপিতে গিয়ে আজকে টিকিট পেয়েছে। লোক পাচ্ছে না তাই লোকসভার এমপিকে বিধায়কের টিকিট দিয়েছে বিজেপি। কোথায় এমপি কোথায় এমএলএ!”
গোঘাটে আরও একবার নাম না করে দলত্যাগী প্রাক্তন তৃণমূল নেতাদের একহাত নিলেন মমতা। মেজাজ হারিয়ে বললেন, “শালা, দুধ-কলা দিয়ে এতদিন কালসাপ পুষেছি। মীরজাফরের দল, বলরামপুরে আমার একটা ছেলেকে এত মেরেছে যে ছেলেটা বাঁচবে কিনা আমি জানি না। কোমায় আছে এখন। ওর বাড়িতে আমি গিয়েছিলাম। এত বড় সাহস, আমার গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। নন্দীগ্রামে পা ভেঙেও শান্তি হয়নি।” হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, “ইলেকশনটা হয়ে যাক, তারপর দেখবো কত ধানে কত চাল। অত বাড়াবাড়ি করতে যেও না। আমিও চাইলে অনেক কিছু করতে পারি। কিন্তু করছি না। আমি চাই ভোটটা শান্তিপূর্ণভাবে হোক।”
নারী নিরাপত্তা নিয়ে বিজেপিকে তুলোধোনা করে মমতার হুংকার, “গুন্ডা, মীরজাফরের দল, এত বড় ঔদ্ধত্য? কী ভাবে ওরা? উত্তরপ্রদেশে একটা হাথরাস করেছে বলে এখানেও করবে? বাংলার একটা মেয়ের গায়ে হাত দিয়ে দেখ। এখনও মনে রাখবেন শুধুমাত্র ইলেকশন বলে চুপ করে আছি। ইলেকশন না থাকলে দেখে নিতাম কার কত বড় চেহারা।”