কলকাতা: ডিভিসি অতিরিক্ত জল ছাড়ায় ২০১৫ সাল থেকে আজ পর্যন্ত রাজ্য চারবার ম্যান মেড বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে বলে রাজ্য সরকার অভিযোগ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ এই অভিযোগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি এর আগেও ২০১৫, ২০১৭ এবং ২০১৯ সালে একই কারণে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন। ২০১৫ সালে চিঠি দিয়ে ডিভিসির জলাধার এবং তাদের ১৮ হাজার চেক ড্যামের সংস্কার করার দাবি জানানো হলেও আজও পর্যন্ত সেই সমস্যার কোন সমাধান করা হয়নি বলে তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।
এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছেন। একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কথা বলেছেন তিনি। সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাজ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কেন্দ্রের তরফে এখনো কোনো আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায়নি বলেও তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। চলতি বন্যায় প্রাণহানি সহ রাজ্যে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শীঘ্রই তার হিসাব তিনি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠাবেন বলেও জানিয়েছেন। মমতার মূল বক্তব্য, এখন বর্ষাকাল এবং বর্ষার জন্য সব জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে কিন্তু বন্যা পরিস্থিতি বর্ষার জন্য হয়নি। জল ছাড়া হয়েছে সেই কারণে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তিনি এই বন্যা পরিস্থিতিকে man-made বলেও কটাক্ষ করেন। যদিও দামোদর উপত্যকা কর্তৃপক্ষের দাবি, জল ছাড়ার আগে লিখিত অনুমতি নেওয়া হয় এবং এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজ্য সরকারের লিখিত অনুমতি নিয়েই জল ছাড়া হয়েছে। নিম্নচাপের জেরে বাঁধ গুলি জল ধারণ ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া জল ছেড়েছে ডিভিসি।
প্রসঙ্গত, হাওড়া, হুগলি ,পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুর এই চার জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যেই ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, ১ লক্ষ ১৩ হাজার ১৮১ জন দুর্গত মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চার জেলায় এখনও পর্যন্ত ৩৬৫ টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এই ত্রাণ শিবির গুলিতে ৪৩ হাজার ১৯২ জন আশ্রয় নিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।