বগটুই গ্রামে মুখ্যমন্ত্রী, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আনারুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ মমতার

কড়া শাস্তি চাই, একে পেলাম, ওকে পেলাম না— এ সব আমি শুনব না

রামপুরহাট: বগটুই গ্রামে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখানে পৌঁছেই সিট-এর অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি৷ সোমবারের ঘটনার পর থেকেই আতঙ্ক গ্রাস করেছে গোটা বগটুই গ্রামকে৷ কথা বলে গ্রামের বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করতে চান মমতা৷ নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি আহতদের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও৷ 

আরও পড়ুন- গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতার অস্ত্রপচার কলকাতায়, অবস্থার উন্নতি হয়নি

এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী গ্রামে আসার কিছুক্ষণ আগেই বগটুইয়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছে নিহতদের পরিবারকে৷ এদিন পৃথক পৃথক ভাবে ভাদু শেখের পরিবার ও ৮ জন নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী৷ অকুস্থলে দাঁড়িয়ে গোটা বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করছেন তিনি৷ উল্লেখ্য, সোমবারের ঘটনার পর থেকেই গ্রামছাড়া ছিল ভাদু শেখ ও ৮ নিহতের পরিবারের সদস্যরা৷ গ্রামে পৌঁছনোর পরেই মমতার নির্দেশ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আনারুলকে গ্রেফতার করবে পুলিশ৷ অভিযোগ পেয়েও সময় মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি আনারুল৷ সময় মতো পুলিশ পাঠালে হয়তো এই ঘটনা আটকানো সম্ভব হতো৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হয় আনারুলকে আত্মসমর্পণ করতে হবে না হলে যে খান থেকে হোক গ্রেফতার করতে হবে।’’ পাশাপাশি  জানান, ১০জনের পরিবারকে একজন করে চাকরি দেওয়া হবে৷  

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এক জন খুন হওয়ার পরেও এসডিপিও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল৷ এখানে আগেও অনেক খুন হয়েছে৷ এসডিপিও নিজের দায়িত্ব পালন করেননি৷ একই ভাবে আইসি-ও নিজের দায়িত্ব পালন করেননি৷ যাঁরা নিজের দায়িত্ব পালন করেননি এবং জেনেশুনেও পুলিশকে খবর দেয়নি তাঁদের কঠোর শাস্তি চাই৷ তাঁর কথায়, এই ঘটনার পিছনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র রয়েছে৷ ভালো ভাবে পুলিশ পিকেটিং রাখতে হবে৷  

তিনি বলেন, ‘‘আমি কিছু শুনতে চাই না। কড়া ব্যবস্থা নিন। একে পেলাম, ওকে পেলাম না— এ সব আমি শুনব না’’ ‘‘যাঁরা জেনেও পুলিশকে ঠিক মতো কাজে লাগায়নি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভাদু শেখকে মারার ঘটনা খারাপ। তার পর যা হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাঁদের দায়িত্ব নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে৷ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পাঠানো হবে৷ যাঁদের ঘরবাড়ি পুড়ে গিয়েছে, তাঁরা ১ লক্ষ টাকা করে পাবেন।  

তাঁর কথায়, জীবনের বিকল্প কখনও চাকরি হয় না। তাও চাকরি দেওয়া হবে৷ দশজনের পরিবারকে একটা করে চাকরি দেওয়া হবে৷ সঙ্গে আরও ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। যাঁদের ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে তাঁদের এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। তিনটি বাচ্চাকে দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা করে।’’ তিনি জানান, ‘‘আমার নিজের কোটা থেকে আমি ১০ জনকে চাকরি দেব। শুধু এখানকার লোক ঘটনায় জড়িত, না বাইরের লোক এসেছে, তা দেখতে হবে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’’ তিনি জানান, তদন্ত তদন্তের পথে চলবে৷ আমি এতে হস্তক্ষেপ করব না৷ দোষীরা ছাড় পাবে না৷ সারা বাংলায় তল্লাশি চালিয়ে যত বোমা আছে, অস্ত্র আছে তা উদ্ধার করতে হবে৷