জলপাইগুড়ি: কেন্দ্রীয় সরকারের স্মার্ট সিটি প্রকল্পের ২০০০ কোটি টাকা দেয়নি রাজ্য, তার জন্য ব্যাহত হয়েছে আসানসোলের উন্নয়ন। রাজনৈতিক কারণে উন্নয়ন ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ তুলে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে আসানসোলের প্রশাসক তথা বিদায় মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আবহে ইতিমধ্যেই বিরাট চাপে রয়েছে তৃণমূল, এদিকে জিতেন্দ্র তিওয়ারি রাজ্যের নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে দেওয়া বিস্ফোরক চিঠির পর স্বাভাবিকভাবেই পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছে। তবে আজ জলপাইগুড়ি থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন বার্তা দিয়েছেন যা শুনে মনে হবে তিনি হয়তো ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছেন। একটি বা দুটি নয়, ছটি স্মার্ট সিটির ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শিলিগুড়িতে তিস্তা শহর হচ্ছে, স্মার্ট সিটি, একইসঙ্গে ডুমুরজলা আর কল্যাণীতেও হচ্ছে স্মার্ট সিটি। সব মিলিয়ে ৬ টি স্মার্ট সিটি হচ্ছে। একই সঙ্গে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়া হচ্ছে। এদিকে যত উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলায়, সবার রিকগ্নিশন করে দেওয়া হয়েছে। বাকি তো কিছুই নেই। এই মন্তব্য করে একদিকে যেমন পরোক্ষে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলেন তিনি, উল্টোদিকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেও আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ উদ্বাস্তু কলোনির প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এখানে কাউকে আর বিজেপির এনআরসি গাট্টা খেতে হবে না, সব কলোনি আইনগত স্বীকৃতি পেয়ে গেছে, কারুর সমস্যা হবে না।
উল্লেখ্য, জিতেন্দ্র তিওয়ারির অভিযোগ, কেন্দ্রের মোদী সরকারের স্মার্ট সিটি প্রকল্পের ২০০০ কোটি টাকা দেয়নি রাজ্য, ফলে ব্যাহত হয়েছে এলাকার উন্নয়ন৷ পুরমন্ত্রীকে বিস্ফোরক চিঠির পর রানিগঞ্জের দু’টি কলেজের গভর্নিং বডির সভপতির পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা৷ চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের স্মার্ট সিটি প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল আসানসোল। সেই অর্থে কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ সহ একাধিক কাজ করার কথা ছিল। যদিও রাজনৈতিক কারণে সেই টাকা আসানসোলকে নিতে দেয়নি রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের অর্থের বিকল্প হিসাবে রাজ্য সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা থাকলেও সেই প্রতিশ্রুতি পালন করা হয়নি। অন্যদিকে, মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, রাজ্য সরকারের প্রতিটা দফতর প্রাপ্য টাকার কথা জানিয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি লেখে। কারণ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকার প্রয়োজন হলে রাজ্য সরকারের কাছে চাওয়া হয়, কখনো তা পাওয়া যায়, কখনো যায় না। এক্ষেত্রেও হয়তো একই রকম ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে তিনি মনে করছেন, জিতেন্দ্র তিওয়ারি হয়তো ভুল বুঝছেন গোটা ব্যাপারটায়।