এবার নিজামুদ্দিন প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী, দিলেন খতিয়ান

করোনার বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইকে অনেক বেশি কঠিন করে তুলেছে দিল্লির নিজামুদ্দিন৷ তবলিঘি জামাতের ডাকা ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন হাজারেরও বেশি মানুষ৷ সেখান থেকে তাড়া ছড়িয়ে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এই বিষয়ে একাধিকবার বিবৃতি দিলেও, এতদিন নিজামুদ্দিন নিয়ে একটি বাক্যও খরচ করেনি রাজ্য৷ বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রসঙ্গে প্রথমবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷  

f320d353cb5797282ae81f865078ecca

কলকাতা:  করোনার বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইকে অনেক বেশি কঠিন করে তুলেছে দিল্লির নিজামুদ্দিন৷ তবলিঘি জামাতের ডাকা ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন হাজারেরও বেশি মানুষ৷ সেখান থেকে তাড়া ছড়িয়ে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এই বিষয়ে একাধিকবার বিবৃতি দিলেও, এতদিন নিজামুদ্দিন নিয়ে একটি বাক্যও খরচ করেনি রাজ্য৷ বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রসঙ্গে প্রথমবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷  

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নিজামুদ্দিনের সমাবেশে যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর খবর দেওয়া হচ্ছে৷  উল্লেখজনক বিষয়টি হল, অনুমতি দেওয়া হয়েছিল বলেই নিজামুদ্দিনের দরগায় ধর্মীয় সমাবেশ হয়েছিল৷ সেই সময় কেন পদক্ষেপ করা হল না? প্রশ্ন তোলেন তিনি৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশ মন্ত্রক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্যের হাতে থাকে না৷ এই দুটো মন্ত্রকই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন৷  যাঁরা বিদেশ থেকে ভারতে এসেছেন তাঁরা ভারত সরকারের থেকে সবরকম ছাড়পত্র নিয়েই এসেছেন৷ অর্থাৎ গলদটা গোড়াতেই হয়েছে৷ এ রাজ্য থেকেও কিছু মানুষ গিয়েছিলেন ওই সমাবেশে৷ রাজ্যের কাছে এই বিষয়ে খবর আসার পরই নিঃশব্দে কাজ শুরু করে দেয় প্রশাসন৷ যে সম্পর্কে অনেকেই ওয়াকিবহাল নন৷

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, অনেকেই এই বিষয়ে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করছেন৷ কিন্তু কোনও রোগ যখন মহামারির আকার নেয়, তখন সে জাতপাত বা ধর্ম দেখে না৷ সবার ঘরেই ঢুকে পড়ে৷ খানিকটা বন্যার জলের মতো৷ কে হিন্দু, কে মুসলিম বা কে খ্রিস্টান মহামারী সেসব বিচার করে না৷

বলেন, আমাদের দেশে জানুয়ারি মাস থেকে করোনার সংক্রমণ শুরু হয়৷ জানুয়ারির শেষের দিকে ভারতে প্রথম করোনা ধরা পড়ে৷ প্রথম আক্রান্ত হন করলে৷ ভারতে করোনা বিপর্যয়ের রূপ নেবে তা আমাদের কারোরই জানা ছিল না৷ ২৪ মার্চ ভারত সরকার সারা দেশে লকডাইন ঘোষণা করে৷ আর নিজামুদ্দিনের সমাবেশ হয়েছিল ১৩ মার্চ৷ আন্তর্জাকিত বিমানে করে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা সকলেই ভারত সরকারের ছাড়পত্র নিয়েই এদেশে ঢুকেছেন৷ রাজ্যের নয়৷  তা সত্ত্বেও দায় এড়িয়ে যাইনি আমরা৷

নিজামুদ্দিনের খবর আসার ছ’ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশব্দে কাজ শুরু করে দেয় রাজ্য সরকার৷ আজ থেকে ১০-১২ দিন আগেই নিজামুদ্দিনে যোগ দেওয়া ১০৮ জন বিদেশিকে এ রাজ্যে চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে৷ স্বাস্থ্য দফতরের নজরদারিতে গত ১০ দিন ধরে সেখানেই আছেন তাঁরা৷ এঁদের কেউ মালয়েশিয়া থেকে, কেউ ইন্দোনেশিয়া থেকে, কেউ থাইল্যান্ড বা মায়ানমার থেকে এসেছেন৷ পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাঁরা গিয়েছিলেন ওই সমাবেশে, তাঁদের মধ্যে ৬৯ জনকে ওই বিদেশিদের সঙ্গেই কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে৷

নিজামুদ্দিনের যোগ দেওয়া মোট ১৭৭ জন রয়েছেন কোয়ারেন্টাইনে৷ সব মিলিয়ে রাজ্যে কোয়ারেন্টাইনে আছেন মোট ২০০ জন৷ হজ কমিটির সুপারিশে রাজারহাটে হজ টাওয়ারের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে আছেন তাঁরা৷ কিন্তু এতদিন এই খবর সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারে থাকলে কিছু গোপনীয়তা বাজায় রাখতে হয়৷ যে খবর আতঙ্ক তৈরি করে সেই খবর জানানো উচিত নয়৷ সময় হলেই তা জানানো হয়৷ তাঁর কথায়, নিজামুদ্দিন নিয়ে এ রাজ্যে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *