নন্দীগ্রাম: দীর্ঘ পাঁচ বছর পর প্রথম জনসভা করেই নন্দীগ্রামে এদিন বড় রকমের চমক দিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তিনি নন্দীগ্রাম থেকে লড়বেন বলে কার্যত ঘোষণা করে দিয়েছেন এ দিন। একই সঙ্গে তিনি ভবানীপুর থেকে লড়তে পারেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। অর্থাৎ আসন্ন বিধানসভায় দুটি কেন্দ্র থেকে লড়তে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরাট ঘোষণা করে এ দিন নাম না করে দলবদলু নেতাদের উদ্দেশ্যে ইঙ্গিত পূর্ণ বার্তা দেন তিনি।
এদিন মমতা বলেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলন কারা করেছে বা কে করেছে সে বিষয়ে অন্য কারোর থেকে তিনি জ্ঞান নেবেন না। কেউ কেউ একটু ইধার উধার করছে। এই প্রসঙ্গে দলবদল কারি নেতাদের উদ্দেশ্যে নাম না নিয়ে তিনি বলেন, রাজনীতিতে তিন ধরনের লোক হয়, একদল লোভী, ত্যাগী এবং ভোগী। মমতার কথায়, যারা ত্যাগ করতে জানে তারা কোথাও যায় না। অন্যদিকে যাদের প্রচুর সম্পত্তি এবং টাকা তারা সেটা রক্ষা করতে দল ছাড়ছে। বিজেপি বলছে জেলে থাকো নয় ঘরে থাকো। এই প্রসঙ্গে বিজেপিকে এদিনও ওয়াশিং মেশিন বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে নন্দীগ্রামে আসন্ন নির্বাচনে ভোটে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নন্দীগ্রামের সঙ্গে তাঁর আত্মার টান রয়েছে। তিনি অবশ্যই চাইবেন এখানে ভালো প্রার্থী দিতে। যদিও তিনি এই বিষয়ে এখনও ঘোষণা করছেন না। কিন্তু তিনি যদি নন্দীগ্রাম থেকে নির্বাচনে লড়েন তাহলে কেমন হয়, এই প্রশ্ন জনতার দরবারে ছুড়ে দেন মমতা। তারপরেই বলেন, তিনি ভাবছিলেন, কারণ তাঁর একটু ইচ্ছে হল। নন্দীগ্রাম তাঁর মনের কাছের জায়গা, তাঁর ভালবাসার জায়গা। তাই তিনি এখান থেকে লড়তে চান। এই প্রসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, ভবানীপুরেও তিনি ভালো প্রার্থী দেবেন, কারণ সেটাও তাঁর ভালবাসার জায়গা।
অন্যদিকে এ দিন অভিশপ্ত ১৪ মার্চের স্মৃতিচারণও করেন মমতা। বলেন, ২৬ দিন অনশন করার পর তিনি প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে তাঁর দুটো অপারেশন হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে বেরোনোর পর তিনি জানতে পারেন নন্দীগ্রামে গুলি চলছে। চিকিৎসকদের বাধা না শুনে নন্দীগ্রামে আসছিলেন তিনি। সেই সময়ে কোলাঘাটের কাছে তাঁকে পেট্রোল বোমা দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে এ দিন জানান মমতা। একই সঙ্গে বলেন, তৎকালীন রাজ্যপাল তাঁকে ফোন করে সতর্ক করে বলেছিলেন, তিনি যাতে সেখান থেকে ফিরে আসেন কারণ তাঁকে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে। এককথায় নন্দীগ্রামে যেতে নিষেধ করেছিলেন রাজ্যপালও। কিন্তু তিনি সেদিন কারুর কথা শোনেননি বলে এ দিন স্পষ্ট করেন মমতা।