রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন নয়! ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন নয়! ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

কলকাতা: তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়ে এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে প্রথম কাজ হবে রাজ্যের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। সেই প্রেক্ষিতে এ দিন শপথ গ্রহণ করার পর জরুরি বৈঠক করেন তিনি। এবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করে দেওয়া হল যে রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন করা হবে না ঠিকই কিন্তু আগামীকাল থেকে বন্ধ হয়ে যাবে সমস্ত লোকাল ট্রেন। 

এদিন মমতা বলেন, আগের মতোই রাজনৈতিক এবং সামাজিক জমায়ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং সাধারণ মানুষকে সামাজিক তথা পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং অন্যান্য করোনাভাইরাস নিয়ম বিধি মেনে চলতে হবে। একই সঙ্গে সমস্ত সামাজিক অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি লোক জমায়েত করতে পারবে না বলেও এ দিন জানিয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি বলেন, লোকাল ট্রেন সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে এবং বিমান চলাচলে ও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এর আগে ফল ঘোষণার আগেই সিনেমা হল থেকে শুরু করে বিভিন্ন পার্ক এবং রেস্তোরাঁ, বার, বিউটি পার্লার সমস্ত বন্ধ করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই সিদ্ধান্ত এখনো অপরিবর্তিত থাকছে। এছাড়া সরকারি অফিসে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। অন্যদিকে ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২ টো পর্যন্ত। এছাড়া বাইরে থেকে আসলে rt-pcr টেস্ট বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাস খেলেও প্রত্যেক যাত্রীর এই টেস্ট করাতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল যে বাজার খোলা থাকবে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী সেই সিদ্ধান্ত বহাল থাকছে। জুয়েলারি দোকান খোলার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, করোনা মোকাবিলায় অর্থিক সাহায্য চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফের চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। মূলত বিনামূল্যে টিকাকরণ থেকে শুরু করে হাসপাতালের বেড, ওষুধ এবং অক্সিজেন সংক্রান্ত একাধিক ইস্যু তুলে ধরে এই চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছিলেন তিনি কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনরকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়ে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন তিনি। আজ রাজভবনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হওয়ার পর প্রথমবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন যে এই সরকারের প্রথম কাজ হবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ। সেই প্রেক্ষিতে প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে নিজের কাজ শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × four =

নোটবন্দির মতো গৃহবন্দি করার পক্ষে নই! রাজ্যে লকডাউন নয়, স্পষ্ট মমতা

নোটবন্দির মতো গৃহবন্দি করার পক্ষে নই! রাজ্যে লকডাউন নয়, স্পষ্ট মমতা

মালদহ: জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন যে তিনি লকডাউন সম্পর্কে আপনি কিছু ভাবছেন না এবং ওটা সর্বশেষ অস্ত্র। আজ মালদহের সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লকডাউন কার্যকর করা নিয়ে সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটালেন। তিনি স্পষ্ট জানালেন, রাজ্যে এখনই লকডাউন নয়।

মমতার কথায়, আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানে থাকতে হবে সাধারণ মানুষকে। যদি ভাইরাস আক্রান্ত হন তাহলে নিজের বাড়িতেই কোয়ারেন্টিনে থাকুন, না হলে সেফ হোমে থাকতে পারেন, এমন বার্তা দেন তিনি। রাজ্যে আবার লকডাউন হবে কিনা সেই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মমতা স্পষ্ট জানান, তিনি নোট বন্দির মত গৃহ বন্দী করার পক্ষে নয় তাই রাজ্যে এখন লকডাউন হবে না। কারণ লকডাউন হলে মানুষের খুব দুর্ভোগ হয় সেটা গত বছর ভালো ভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই আবার লকডাউন করার কোনও পরিকল্পনা নেই রাজ্যের। এর পাশাপাশি করোনাভাইরাস টিকাকরণ নিয়েও মমতা বলেন, ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রায় ১ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়ে গিয়েছে এবং আরো ১ কোটি ডোজের আবেদন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে করা হয়েছে ইতিমধ্যে।

 

মমতা আরো বলেন, এই মুহূর্তে ১১ হাজার বেড রয়েছে, সেটা আগামী দু-একদিনের মধ্যেই ১৩ হাজার হয়ে যাবে। এর পাশাপাশি ইতিমধ্যেই বাড়ানো হয়েছে সেফ হোমের  সংখ্যা। একই সঙ্গে অক্সিজেনের চাহিদা যে পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে সেই দিকে নজর দিয়ে মমতা জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে যাতে অক্সিজেনের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে সেই ব্যাপারে আলাদা নজর দিতে হবে। এদিনই বালুরঘাটের জনসভা থেকে রাজ্যের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার বছরের শুরুতে বলল করোনাভাইরাস চলে গেছে। যদি চলে গিয়ে থাকে তাহলে এখন আবার কি করে ফিরে এলো, প্রশ্ন করেন তিনি। এই প্রেক্ষিতেই বলেন, নরেন্দ্র মোদী সরকার সাধারণ মানুষের ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু আসলে তারা বহিরাগত রাজ্যে নিয়ে এসে ভাইরাস সংক্রমণ বাড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে মমতার স্পষ্ট বক্তব্য, করোনাভাইরাস মোদীর তৈরি মহামারী, এটা মানুষের তৈরি মহামারী নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 18 =