কলকাতা: নবান্নে জেলাশাসক, বিডিওদের সঙ্গে ভার্চুয়াল প্রশাসনিক বৈঠকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর একাধিক বাঁধ মেরামতি করার পরেও, ফের জলের ধাক্কায় তা ভাঙতে শুরু করেছে৷ তাহলে কি তাড়াহুড়োয় গুরুত্ব দেওয়া হয়নি? প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী৷
এদিনের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে৷ কিছু কিছু জায়গায় জল জমতেও শুরু করেছে৷ অনেক জায়গায় বাঁধও ভেঙে পড়ছে৷ আম্পানের পর যে বাঁধগুলি মেরামত করা হয়েছিল, সেগুলিতেও ভাঙন ধরেছে৷ কেন ভাঙন ধরছে, তা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে৷ সেইসঙ্গে ত্রানের টাকা দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের দিয়ে দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেন তিনি৷ নতুন তালিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দিতে হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন- ঘরে ফিরছেন শোভন? রত্নার ক্ষমতা খর্ব করে নয়া কৌশল তৃণমূলের?
মমতা বলেন, আগামী কয়েকদিন বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে৷ কয়েকটি জেলায় জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে৷ এর মধ্যে যদি ডিভিসি’র জল ছাড়া হয়, তাহলে কী কী পদক্ষেপ করা হবে, তা আগাম ঠিক করে নিতে হবে৷ আগে থেকেই সমস্ত ব্যবস্থা করে নিতে হবে৷ তাঁর কথায়, জল ধরো জল ভরো প্রকল্প শুরু হওয়ার পর আগের চেয়ে পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নত হয়েছে৷ এই প্রকল্পে ৩ লক্ষেরও বেশি পুকুর কাটা হয়েছে৷ ফলে আগের তুলনায় জল অনেকটাই কম জমছে৷
বন্যা পরিস্থিতি দেখা গেলে কোন কোন হাসপাতালে জল ঢোকার সম্ভাবনা আছে, তা আগে থেকে জেনে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷ কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে বন্যা সামল দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে বলেই তাঁর বক্তব্য৷ তিনি আরও জানান, বাকুড়া, বীরভূম, হাওড়া, হুগলীতে আড়াই হাজার কোটি টাকার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে৷ এই কাজ সম্পন্ন হলে আর জল জমতে পারবে না৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সব রাজ্যে বন্যার সমস্যা নেই৷ কিন্তু বাংলায় আছে৷ বিহারে জল জমলে তা মালদায় ঢুকে যায়৷ ঝাড়খণ্ড জল ছাড়লে হাওড়া ও হুগলী প্লাবিত হবে৷ তার উপর দীর্ঘদিন ড্রেজিং না করায় এই সমস্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে৷
আরও পড়ুন- শান্তিনিকেতনে প্রতিবাদ এবিভিপির! সমর্থন পেতে সেই রবি-আবেগই হাতিয়ার
তাঁর নির্দেশ, যদি কোনও জায়গায় জল ঢোকে বা জল ঢোলার সম্ভাবনা থাকে পুলিশ মাইকে প্রচার করে সেখানকার মানুষকে সতর্ক করবে৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধার করা হবে৷ বিডিও এবং আইসিদের হাতে হাত মিলিয়ে এই কাজটা করতে হবে৷ গোটা বিষয়টি তত্ত্বাবধান করবেন জেলা শাসকরা৷ জল ছাড় ও জল জমার আগেই এই পরিকল্পনা করে নিতে হবে৷
হাওড়ার মতো জেলায় অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে যায়৷ তাই পাম্প প্রস্তুত রাখতে হবে৷ যে সব জেলায় বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে, সেই অঞ্চলগুলি ঘুরে দেখতে হবে প্রশাসনিক কর্তাদের৷ কোথায় রাস্তা খারাপ হচ্ছে, কোথায় জল জমছে তা দেখতে হবে৷