‘একটা-দুটো জোয়ারে আসে ভাটায় চলে যায়, কিছু এসে যায় না’, আত্মবিশ্বাসী মমতা

যারা তৃণমূলে প্রথম থেকে ছিল তারা আছে, একটা-দুটো জোয়ারে আসে, ভাঁটায় চলে যায়।

 

কোচবিহার: গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসে অস্বস্তি বিগত কয়েক মাস ধরেই। মূলত শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে দিনদিন চাপ বাড়ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে সার্বিকভাবে অস্বস্তি বাড়লেও আত্মবিশ্বাস এতোটুকু কমাতে চান না তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিন কোচবিহার থেকে জনসভায় তিনি যে বক্তব্য রাখলেন তাতে এই ব্যাপারটা স্পষ্ট হল। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট কথা, যারা তৃণমূলে প্রথম থেকে ছিল তারা আছে, একটা-দুটো জোয়ারে আসে, ভাটায় চলে যায়। তাতে কিছু এসে যায় না।

এদিন কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রথম থেকে যারা তৃণমূলের রয়েছে তারা কিন্তু আজও তৃণমূলেই আছে। তবে কয়েক জন জোয়ারে আসে, ভাটায় চলে যায়, কিন্তু তাতে কিছু এসে যায় না। এই প্রসঙ্গে মমতা স্পষ্ট দাবি করেন, যারা প্রথম থেকে দলে ছিল তারা শেষ দিন পর্যন্ত দলেই থাকে, কারণ প্রত্যেক দিন চরিত্র বদল করা যায় না। মমতার কথায়, রোজ জামা কাপড় বদলানো যায়, কিন্তু আদর্শ বদল করা যায় না। এই মন্তব্য করে পরোক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক কাকে বার্তা দিলেন তা বুঝতে বেশি সময় লাগার কথা নয়। কারণ গতকাল জলপাইগুড়িতে বক্তৃতা দেওয়ার সময়ও নাম না করে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। গতকাল বলেছিলেন, অনেকে আছে যারা ১০ বছর ধরে দলের খেয়ে এখন প্রতারণা করছেন, কিন্তু তিনি তা সহ্য করবেন না। একদিন পর কোচবিহার থেকে বক্তৃতা দিয়ে একই রকমভাবে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

একে অপরকে হয়তো বার্তা দিচ্ছেন কিন্তু কখনোই কেউ কারোর নাম নিচ্ছেন না। এই ব্যাপারটা আরও স্পষ্ট হয়েছে গতকাল শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য শুনে। তিনিও কারুর নাম করেননি, কিন্তু দাবি করেছেন, অনেক বড় বড় পদে থাকা অনেকেই তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ যখন চট ঘেরা জায়গায় গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ দেবে, তখন সেই সব লোকদের পতন ঘটবে, পরিস্থিতি কি হয় তা টের পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে তিনি যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কথা বলতে চেয়েছেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। এদিকে না তো কাকে পরোক্ষে বার্তা দিতে চেয়েছেন, সে বিষয়েও আলাদা করে বলার দরকার পড়ে না। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই, ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’র মতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *