‘অভূতপূর্ব সংকট’, মুক্তির পথ খুঁজছেন মুখ্যমন্ত্রী, লকডাউন বাড়ার ইঙ্গিত

‘অভূতপূর্ব সংকট’, মুক্তির পথ খুঁজছেন মুখ্যমন্ত্রী, লকডাউন বাড়ার ইঙ্গিত

কলকাতা:  আমাদের সামনে ‘অভূতপূর্ব এক সংকট’ উপস্থিত৷ এই সংকট থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে৷ রাজ্যের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিকে এভাবেই বর্ণনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেই সঙ্গে রাজ্য লকডাউন যে বাড়তে চলেছে বুধবার নবান্নের বৈঠকে আরও একবার সেই ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ 

এদিন তিনি বলেন, বিশ্বের অধিকাংশ দেশই মে মাসের শেষ সপ্তাহ বা জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত লকডাউন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ গতকাল রাজ্যের বিশেষজ্ঞ কমিটিও সেই সুপারিশই করেছে৷ তবে লকডাউন নিয়ে কেন্দ্রের নির্দেশিকায় অস্পষ্টতা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রের কাছে স্বচ্ছ নির্দেশিকা চেয়েছি৷ ‘অভূতপূর্ব সংকট’ থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে৷ 

সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর আর্জি, এখনই ঘর থেকে বেরনোর চেষ্টা করবে না৷ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে লকডাউনের মধ্যে দিয়ে চলতে হবে আমাদের৷ তবে করোনার জন্য যেন শিশুদের টিকাকরণ থেমে না থাকে৷ বা কোনও হৃদরোগী বা কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত কোনও ব্যক্তিকে চিকিৎসা না করে ফিরিয়ে দেবেন না৷ পাড়ায় পাড়ায় চেম্বার বন্ধ আছে৷ সেই সকল চিকিৎসকের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, সতর্কতা মেনে ফের চিকিৎসার কাজ করা শুরু করুন৷ তবে চেম্বারে যেন রোগীরা একসঙ্গে ভিড় না জমায়৷ দূরত্ব মেনে চলতে হবে৷ মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক৷ দোকানে বা বাজারেও ভিড় করা চলবে না৷ 

তিনি আরও বলেন, জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ট্যাক্সিকে অনুমোদন দেওয়া হলেও, সামনে একজন এবং পিছনে দুই জনের বেশি উঠতে পারবে না৷  এদিকে কোটা থেকে পড়ুয়াদের রাজ্যে ফেরাতে বাস পাঠানো হয়েছে বলে জানা মুখ্যমন্ত্রী৷ প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার ছেলেমেয়ে আসছে ওই বাসে৷ পাশাপাশি ভিন রাজ্যে আটকে পরা মানুষদের ফিরিয়ে আনার কাজও শুরু হয়েছে৷  এদিন রাজ্যের আশাকর্মীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, রাজ্যের ৩.৪ কোটি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে করা হয়েছে৷ হেলথ স্ক্রিনিং করা হচ্ছে৷ যেভাবে আশাকর্মীরা কাজ করছেন তা প্রশংসাযোগ্য৷ 

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা রোগী কিন্তু অচ্ছুৎ নয়৷ কাউকে ঘৃণা করবেন না৷ তবে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে৷ কারণ এই ভাইরাস মানুষের নিশ্বাসপ্রশ্বাস বা হাঁচি কাশির মধ্যে দিয়ে ছড়াচ্ছে৷ তবে যাঁদের শরীরে সবেমাত্র করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছে বা সন্দেহজনক ব্যক্তিকে নিজেদের বাড়িতেই পরিবারের অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে চিকিৎসা করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ মুখ্যমন্ত্রীও সেই পরামর্শই দেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 3 =