কলকাতা: দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে খুলে গেল মাঝেরহাট ব্রিজ৷ বৃহস্পতিবার বিকেলে মাঝেরহাট সেতুর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মাঝেরহাট ব্রিজের নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘জয় হিন্দ সেতু’৷ নিবনর্মিত সেতুর উপর দিয়ে পায়ে হেঁটে পরিদর্শ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন- ট্যাব পাবে ৯ লক্ষ ছাত্র ছাত্রী! অনলাইনে পড়াশোনার সুবিধার্থে ঘোষণা মমতার
নিবনির্মিত সেতুটি ৬৫০ মিটার দীর্ঘ৷ এর মধ্যে ঝুলন্ত অংশ ২২৭ মিটার৷ রয়েছে চারটি লেন৷ সেতুর বহন ক্ষমতাও আগের থেকে অনেকটাই বেড়ে গিয়ছে৷ তবে এখনই মালবাহী ভারী গাড়ি মাঝেরহাট সেতুতে উঠবে না বলে জানা গিয়েছে৷ এই সেতুটি তৈরি করতে রাজ্যের খরচ হয়েছে ৩১১.৭৬ কোটি টাকা৷ এটিই কলকাতার প্রথম কেবল স্টেড রেল ওভারব্রিজ৷ এদিন সেতু উদ্বোধনী মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী আক্রমণ শানান রেলকে৷ তাঁর নিশানায় ছিলেন দিল্লির নেতারও৷
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভেঙে পড়েছিল মাঝেরহাট সেতুর একাংশ৷ এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল তিনজনের৷ আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওই দিনটির কথা এখনও মনে আছে৷ সেদিন খবর পেয়েই অকুস্থলে ছুটেছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর, পুলিশ থেকে শুরু করে ফিরহাদ হাকিম, অপূর বিশ্বাস, পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে৷ টানা ৭২ ঘণ্টা এখানে দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করেছিল পুলিশ-প্রশাসনিক কর্তারা৷ তিনি জানান, নতুন সেতুটি আগের চেয়েও আরও বেশি শক্তিশালী করা হয়েছে৷ ভার বহন ক্ষমতা ১৫৫ টন থেকে বেড়ে ৩৮৬ টন হয়েছে৷ তৈরি হয়েছে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর কায়দায়৷ এখানে থাকছে সেন্সর৷ প্রায় ২ বছর ৩ মাস বন্ধ থাকার পর চালু হচ্ছে মাঝেরহাট সেতু।
আরও পড়ুন- তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার হাত ধরে খুলছে কর্মসংস্থানের দরজা, আসছে বিনিয়োগ, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলায় মতো এতো সেতু কোথাও নেই৷ কিন্তু ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল সরকার দেখল দীর্ঘদিন সেতুগুলি অডিটই করা হয়নি৷ ক্ষমতায় আসার পর সেগুলি অডিট করানো হয়েছে৷ মাঝেরহাট সেতু দুর্ঘটনার পরই একটি অডিট কমিটি গঠন করে রাজ্য৷ ইতিমধ্যে বহু সেতু সার্ভে করেছে এই কমিটি৷ কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে৷
এদিন রেল ও কেন্দ্রকে এক সারিতে রেখে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘রেল অনুমতি দিলে আরও ৯ মাস আগে এই সেতু তৈরি হয়ে যেত৷ দেরি করিয়ে দিয়ে এখন নাটক করতে এসেছে৷ তবে সবটা রেলের অফিসারদের দোষ নয়৷ দোষ তাঁদের যাঁরা দিল্লিতে বসে কলকাঠি নাড়ে৷’’ তিনি আরও জানান, এই সেতু নির্মাণের জন্য রেল ৩৪ কোটি টাকা নিয়েছে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে৷ কেন এই টাকা নেওয়া হল? কার নির্দেশে এই টাকা নেওয়া হল? প্রশ্ন তোলেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পারলে টাকা ফেরত দিক রেল৷ এছাড়াও পোর্টট্রাস্ট রাজ্য সরকারের থেকে ৭৭ লক্ষ টাকা নিয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ টালা ব্রিজ ভাঙার জন্যও ৫৫ কোটি টাকা নিয়েছে বলে জানান তিনি৷