কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামের শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারচুপির অভিযোগ প্রথম থেকেই তোলা হচ্ছিল, সেই বিষয় নিয়ে আদালতে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও নন্দীগ্রাম মামলার বিচারপতি নিয়ে বিতর্ক ছিল শুরু থেকেই কারণ তাকে বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলা হচ্ছিল শাসক দলের পক্ষ থেকে। একই সঙ্গে তাঁর বেঞ্চ থেকে মামলা সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করা হয়। তবে আজ নন্দীগ্রাম মামলা থেকে নিজেই সরে দাঁড়িয়েছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। যদিও যেতে যেতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছেন তিনি।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেস বিচারপতি কৌশিক চন্দের বিরুদ্ধে বিজেপি ঘনিষ্ঠ হওয়ার অভিযোগ তুলেছিল। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতে তাঁর সঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছবি পোস্ট করা হয়েছিল। যা নিয়ে আদালতের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন আইনজীবীদের একাংশ। সেই প্রেক্ষিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জরিমানা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিচারপতির বক্তব্য, তিনি সর্বদা নিরপেক্ষ থাকেন কিন্তু পেশার তাগিদের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। তা বলে এইভাবে কাউকে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত করা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার। সেই কারণেই এই জরিমানা বলে জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর তরফে যে ইলেকশন পিটিশন করা হয়েছিল তিনি তা শুনবেন না৷ মুখ্যমন্ত্রী এজলাস বদলের যে আবেদন করেছিলেন, তাতে আজ সাড়া দেয় কলকাতা হাইকোর্ট৷ কৌশিক দন্দ জানান, অন্যান্য কারণ বশত এই মামলা থেকে তিনি সরে দাঁড়াচ্ছেন৷
আরও পড়ুন- বাংলার কোভিড গ্রাফ আরও তলানিতে, ৯৮% ছুঁইছুঁই সুস্থতার হার
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি মূলত দুটি বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন৷ প্রথমত, বিচারপতি কৌশিক চন্দর সঙ্গে বিজেপি’র একটা যোগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেছিলেন৷ সিঙ্ঘভি বলেন, বিচারপতি কৌশিক চন্দ বিজেপি’র হয়ে একাধিক মামলা লড়েছেন৷ কৌশিক চন্দের এজলাসে এই বিচারপর্ব চললে তিনি সুবিচার পাবেন বলে মনে করছেন না৷ যদিও তাঁর এই যুক্তি আজ খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি ৷ তাঁর বক্তব্য, প্রত্যেক মানুষেরই একটি রাজনৈতিক দিক থাকে৷ তিনি কোনও বিশেষ দলকে পছন্দ করতেই পারেন৷ তবে সেটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়৷ একজন বিচারপতিও ভোটের সময় গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে থাকেন৷ তা বলে কোনও বিচারপতি নির্দিষ্ট দলের হয়ে পক্ষপাতিত্ব করবেন, এই যুক্তি তিনি মানতে নারাজ৷