জলপাইগুড়ি: আর কয়েক মাস পরেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য বিরাট অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শাসকদলের সবচেয়ে বড় অস্বস্তির কারণ এই মুহূর্তে শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর পাশাপাশি দলের একাধিক নেতা এবং বিধায়ক তৃণমূলের বিরুদ্ধে গদাভারি করেছেন। অবশ্যই এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত অস্বস্তি কাটিয়ে উঠতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে সময় নষ্ট করছেন না তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন জলপাইগুড়ির জনসভা থেকে পরোক্ষে দলের নেতাদের সেই বার্তাই দিলেন তিনি। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এত বছর ধরে দলের খেয়ে এখন এর সঙ্গে বা ওর সঙ্গে বোঝা বাঁধলে তিনি কখনোই সহ্য করবেন না।
এদিন জনসভার মঞ্চ থেকে ভাষণের মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ১০ বছর ধরে দলের খেয়ে, সরকারি থেকে সরকারের খেয়ে এখন নির্বাচনের আগে এর সঙ্গে ওর সঙ্গে বোঝা বাঁধা হচ্ছে। এটা তিনি কোনও মতেই সহ্য করবেন না। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, ৩৬৫ দিন যারা মানুষের পাশে ছিলেন তাদেরই এই নির্বাচনে পরীক্ষা দিতে হবে। আর ২০২১ সালে তৃণমূল কর্মীদের এমন পরীক্ষা দিতে হবে যাতে তারপর থেকে বিজেপি আর কখনো নির্বাচনী পরীক্ষায় বসতে না পারে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিপিএম এবং কংগ্রেসকেও কটাক্ষ করেছেন। স্পষ্ট জানিয়েছেন, বাংলায় বিজেপির এমন হাল করতে হবে যাতে এই দুই দল তাদের দালালি না করতে পারে। মমতা দলের নেতা, কর্মী এবং বন্ধুদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনও ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকলে সরাসরি যেন জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া হয়। কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে জনগণ সব, তারাই তাদের অভিভাবক। তাই অভিভাবকের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়াতে কোনো লজ্জা নেই বলে মনে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি আরো বলেন, লড়াই বা যুদ্ধ যখন আসে তখন যুদ্ধ জয় করাই একমাত্র লক্ষ্য হয়। কে বড়, আর কে ছোট তখন দেখার দরকার নেই। এই প্রসঙ্গে একসঙ্গে লড়াই করার ডাক দিয়ে মমতা উত্তরবঙ্গ বাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দেন, আপনাদের সকলের লক্ষ্য হচ্ছে বিজেপি নামক দলটাকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে দূর করে দেওয়া। মমতা দাবি করেছেন, এখন বিজেপির রাজত্বকালে উত্তরপ্রদেশ ভয়তে কথা বলতে পারে না, রাজস্থান ভয়তে কথা বলতে পারে না। কিন্তু বাংলাকে ভয় দেখালেও বাংলা চুপ থাকবে না। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে কথা বলে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ক্ষমতা থাকলে বিজেপি রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে দেখাক বাংলায়। তাহলে তিনিও সব জায়গায় মিটিং-মিছিল করে ঘুরবেন, কাজ অনেক কমে যাবে। এদিকে বাকি সবার ভোটও তিনি নিয়ে নেবেন।