দুর্গাপুর: রাজ্যে চলছে বিধানসভা নির্বাচন। এর মধ্যেই ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে নয়, গোটা দেশেই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এই ভাইরাস। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামগ্রিক পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ দায়ী করছেন কেন্দ্রীয় সরকার এবং ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে। তাঁর নিশানায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মমতা বলছেন, শুধুমাত্র বাংলা দখল করার লোভে বিজেপি গোটা দেশকে সঙ্কটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
দুর্গাপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি দাবি করেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি যে এই রূপ নিতে পারে তার ইঙ্গিত আগে থেকেই দেওয়া হয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কোন ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়নি। এদিকে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ দখল করার লোভে কেন্দ্রের সরকারের একাধিক নেতা এবং মন্ত্রী বাংলায় এসেছেন এবং আসছেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে বলে দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনকে ফের একবার এক হাত নিয়েছেন তিনি। বলেছেন, আগে থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করেছিল শেষ দফার নির্বাচনগুলি একদিনে করে দিতে। কিন্তু বিজেপির চাপে পড়ে নির্বাচন কমিশন সেই সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এর পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বীকার করে নেন যে বাংলায় অক্সিজেনের অভাব রয়েছে। কিন্তু সেই অভাবের দায় তিনি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। মমতার বক্তব্য, বাংলায় যারা অক্সিজেন সাপ্লাই দিত তাদেরকে কেন্দ্র বলে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশে দিতে। তাহলে বাংলা অক্সিজেন কিভাবে জোগাড় করবে? যদিও মমতা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে শিল্পাঞ্চলে অক্সিজেনের কাজ বন্ধ করে দিয়ে সেই অক্সিজেন সম্পূর্ণ চিকিৎসা ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হচ্ছে। আগামী দিনে অক্সিজেন সিলিন্ডার সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে তিনি মন্তব্য করেছেন, কেন্দ্র বাংলাকে হাতে মারতে চায় এবং ভাতেও মারতে চায়।
তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বাংলার মানুষকে অযথা আতঙ্কিত হতে বারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঘটতে অযথা আতঙ্কিত হবেন না। সচেতন থেকে মাস্ক ব্যবহার করে অন্যকে সচেতন রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এও জানিয়েছেন, আতঙ্কিত হয়ে কেউ যেন হাসপাতালে ভর্তি না হয়। যার বাড়াবাড়ি হবে সে হাসপাতালে চিকিৎসা করাবে, যার বাড়াবাড়ি হবে না সে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করাতে পারে। শুধুমাত্র মাস্ক ব্যবহার করে এবং নিজেকে পরিষ্কার রেখে ভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি। পাশাপাশি এও দাবি করেন, আগেরবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামলে দিয়েছিল রাজ্য সরকার, এবারেও পারবে।