কোচবিহার: লোকসভা নির্বাচন হোক কি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন, ভোটের আগে বিজেপি একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু আদতে একটি প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি। এমন দাবী তৃণমূল সহ একাধিক বিরোধীদলের। এই পরিপেক্ষিতে কোচবিহার থেকে জনসভা করে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করা আক্রমণ করলেন ভারতীয় জনতা পার্টিকে। একাধিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং না রাখার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মমতা স্পষ্ট বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস মা, মাটি, মানুষের সরকার, তারা বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে না। যা বলা হয়, তাই করা হয়, যেটা বলা হয় না, সেটা করা হয় না। একই সঙ্গে বিজেপির নেতাদের যারা বাংলায় এসেছেন পর্যবেক্ষণের জন্য তাদের বহিরাগত বলে ফের একবার কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন কোচবিহারের জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বলেন, বিজেপি সকলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে। ধর্মে ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা রয়েছে তারা। এক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, নিচু তলার এবং মধ্য তাদের দলের কর্মীদের আরো বেশি করে দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ তৃণমূল কংগ্রেস হল মা, মাটি, মানুষের সরকার, এই মা এবং মাটি কখনো কারোর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে না। এই প্রসঙ্গে বিজেপিকে এক হাত নিয়ে তিনি দাবি করেন, তৃণমূল কংগ্রেস যা বলে তা করে দেখায়, কিন্তু যেটা বলে না সেটা করে না। মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে না তৃণমূল কংগ্রেস। মমতার স্পষ্ট দাবি, বাংলার মানুষ যদি বিজেপিকে আটকাতে সচেষ্ট না হয় তাহলে ভবিষ্যতে এখানেও বিভেদের রাজনীতি করে পরিবেশ অশান্ত করে তুলবে তারা। একই সঙ্গে বিজেপির কয়েকজন নেতাকে নাম না করে একহাত নেন মমতা। দাবি করেন, তারা সকাল থেকে শুধু ভাষণ দেন কিন্তু কাজের কাজ কিছু করেন না। ওদের মধ্যে কাজ কম কথা বেশি আচরণ রয়েছে।
বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা আরো বলেন, বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই। এখন আবার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জাতীয় সংগীত বদল করতে চাইছে তারা। কিন্তু বিজেপি সেটা করতে পারবে না, কারণ তৃণমূল কংগ্রেস সেটা করতে দেবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে বলেছেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে তাদের কাছে কোন তথ্যই নেই। এমনকি তিনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেছেন সে ব্যাপারেও তারা কিছুই জানেন না। কিন্তু বাংলায় কিছু বহিরাগত গুন্ডারা এসে সকাল থেকে ভাষণ দিয়ে যাচ্ছে। বাংলার মানুষ এসব সহ্য করবেন না বলে দাবি করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।