কলকাতা: বাংলার নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই তার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলায় ‘বহিরাগত গুণ্ডা’ ঢোকার অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার একটি সভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দেখছেন তো বাংলার বিরুদ্ধে কত বদনাম। প্রতিদিন আপনারা মা, ভাই, বোনেরা রাস্তায় হাটা চলা করেন না? বাংলায় নাকি কোনও আইন শৃঙ্খলা নেই। খাদ্য নেই, স্বাস্থ্য নেই, শুধু নাকি মহামারী রয়েছে। ওদের জিজ্ঞেস করুন দিল্লির ওই কুঠুরির ঘরের মধ্যে কি রয়েছে। সেটার উত্তর দিয়ে যান। বাংলার কাছে কৈফিয়ত চাইতে লজ্জা করে না? বাংলা পৃথিবীতে এখন এক নম্বরে এগিয়ে গিয়েছে মাত্র আট বছরে। এক বছর কোভিড হয়েছে। মাত্র আট বছর সময় পেয়েছি আমরা। তার মধ্যে চারটে নির্বাচনের মুখোমুখি হয়েছি। তার মধ্যে টাকা দেয় না, পয়সা দেয় না, লাঞ্ছনা-বঞ্চনা… আমফান ঝড় হবে, একটা পয়সা দেবে না। বলবে হিসাব দাও। পয়সা দেবে না, সবুজশ্রী হবে। বলবে হিসাব দাও। স্বাস্থ্যসাথী টাকা আমরা দেব। অর ওরা হিসাব চাইবে। বুড়ো আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গিয়েছে। কাজ করব আমরা, কৈফিয়ত চাইবে ওরা।”
এরপর বিজেপিকে একহাত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “মনে রাখবেন বিজেপি বাংলার পার্টি নয়। দিল্লির পার্টি। দিল্লিতে গিয়ে বসে থাকুক। গুজরাটে গিয়ে বসে থাকুক। এখানে যারা গুজরাটি রয়েছে, আমরা দেখে রাখব। চিন্তার কোন কারণ নেই। আমি জানি প্রতিবার নির্বাচনের আগে লোকেরা আসে, আপনাদের বোঝায়। আমরা সব জানি। কিন্তু সবকিছু জেনেও আমাদের কেউ আপনাদের সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করেনি আর করবেও না। গুজরাট, উত্তর প্রদেশ, বিহার ভালো থাকুক।” এরপর খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, তাদের কোন রাজনৈতিক সমস্যা নেই। অথচ বাংলায় বেলায় সমস্ত সমস্যা! “নিজেই নিজেকে থাপ্পড় মেরে বলে, মারল কে তৃণমূল জবাব দাও।” খোঁচা মুখ্যমন্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, “ওরা ‘অভদ্র’ বলতে পারে। কিন্তু আমরা তো বলি না। ওরা অকথ্য, কুকথ্য বলে। আমরা সেটা বলি না। অর্ধসত্য বলে, আমরা সেটা বলি না। বিএসএফ, সিআরপিএফ এত গাড়ি নিয়ে চলে বেড়াচ্ছে। আর দেশের কৃষক আন্দোলন করতে মরে যাচ্ছে। দুদিন বাদে আলুর দাম দেখবেন যখন ৬০ টাকা হবে, বুঝবেন সব নিয়ে নিয়েছে। রাজ্যের হাত থেকে আলু কেড়ে নিয়েছে, পেঁয়াজ কেড়ে নিয়েছে। তেল কেড়ে নিয়েছে। ডাল কেড়ে নিয়েছে। কালোবাজারি, মজুতদার, চোরাকারবারি অ্যালাউ করেছে। দিল্লির বিজেপি সরকার সব টাকা লুটে নিচ্ছে। আর এখানে আপনারা বুঝতে পারছেন না। রাজ্যের গেস্ট হাউসে, পাড়ার ছোট ছোট হোটেলগুলোতে এসে উঠেছে তারা। কেউ বাংলার লোক নয়। বাংলার নির্বাচন, হিম্মত থাকলে বাংলা দিয়ে করুক। বাংলার নির্বাচনের বাইরে কেন আসবে? বহিরাগত গুন্ডাদের আটকান। বাংলাকে বাঁচান। এটা আপনাদের কাছে আমার আবেদন।”