কলকাতা: নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা প্রলয় পালকে ফোন করার কথা নিজের মুখেই স্বীকার করে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সেই ফোন সম্পর্কে বললেন, ‘ভোট চাইতে ফোন করতেই পারি। কথোপকথন ভাইরাল করা অপরাধ’। ফোন করা প্রসঙ্গে মমতার যুক্তি, তিনি শুনেছিলেন কেউ কেউ কথা বলতে চায়। সেই কারণেই তিনি ফোন করেছিলেন তাঁকে। এই মন্তব্য করেই বিজেপি নেতা প্রলয় পালকে ফোন করার কথা নিজের মুখেই স্বীকার করে নিলেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী।
মমতা বলেন, তাঁর কাছে খবর এসেছিল যে কেউ কেউ কথা বলতে চায় তাই তিনি ফোন করেছিলেন। তুমি যদি ফোন না করতেন তাহলে বলা হত, তাঁর খুব অহংকার তাই কথা বলতে চাইছেন না। কিন্তু বিজেপি সেটাই রেকর্ড করে ছেড়ে দিল, এটা ঠিক নয়। পাশাপাশি নিজের কাজকে সমর্থন করে তিনি আরও যুক্তি দিয়ে বলেন, একজন প্রার্থী হিসেবে তিনি যে কারোর কাছে ভোট চাইতে পারেন। যখন ফোনে ফোনে নরেন্দ্র মোদী সবার কাছে ভোট চান তখন দোষ হয়ে যায় না, প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তিনি বলেন, নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে তিনি যদি সেখানকার একজন ভোটারকে ফোন করে থাকেন তাহলে অন্যায় কোথায়। মমতা দাবি করেন, তিনি যদি জানতে পারেন যে কেউ তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইছে, তাহলে তাঁর সঙ্গে কথা বলা একজন জননেত্রী হিসেবে দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কারণ তিনি জনগণের সেবা করেন। কিন্তু সে যদি সেটা রেকর্ড করে ভাইরাল করে দেয় তাহলে অন্যায় সে করবে, তিনি নয়।
যে অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে তাতে ওই মহিলা কণ্ঠস্বরকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “তুমি তো অনেক ইয়ং ছেলে আর অনেক কাজ করো আমি জানি। তুমি একটু আমাদের এবারের সাহায্য করে দাও না, দেখো কোন অসুবিধে হবে না।” তাঁকে আরও বলতে শোনা যাচ্ছে, তাকে নন্দীগ্রামে ঢুকতে দেওয়া হত না এবং মেদিনীপুরে ঢুকতে দেওয়া হত না কারণ সেখানে এক পরিবারের জমিদারি চলত। তিনি আগে খবর রাখতেন না কিন্তু এখন সব খবর রাখেন। একইসঙ্গে দাবি করেন, এখন সাহায্য পেলে তিনি আগামী দিনে সবটা দেখে নেবেন, কোন অসুবিধা হবে না! যদিও ওই বিজেপি নেতা সরাসরি তাঁকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন যে তিনি যে বলে গিয়েছেন সেই দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবেন না।
এর পাশাপাশি ওই বিজেপি নেতা দাবি করেন যে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য এত ত্যাগ করার পরেও তিনি রেসিডেন্ট সার্টিফিকেট পাননি। সেই প্রেক্ষিতে ওই মহিলা কণ্ঠস্বরকে দাবি করতে শোনা যায়, তিনি আছেন, তিনি সব ঠিক করে দেবেন। তাঁর সঙ্গে যা হয়েছে সেটা অন্যায় হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা মনে করিয়ে দেয় যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যখন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তখন তিনি নিজের বাড়িতে ব্রাহ্মণ ভোজন করিয়ে মিটিং-মিছিল করেছিলেন এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে সিপিএমের হাতে মার পর্যন্ত খেয়েছিলেন। কিন্তু অবশেষে এত ত্যাগ করার পরেও দলের সম্মান পাননি। যদিও এত বড় মাপের নেত্রী হয়েও তার মতো একজন সাধারণ কর্মীকে ফোন করার জন্য ওই বিজেপি নেতা মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়েছেন৷