কলকাতা: আরামবাগে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে কার্যত জলে নেমে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করলেন তিনি এবং একই সঙ্গে দুর্গত মানুষদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। পুজোর মুখে প্লাবিত রাজ্যের একাধিক জেলা। মুখ্যমন্ত্রী এই ইস্যুতে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ডিভিসির দিকেই। দাবি করা হয়েছে, তাদের ছাড়া জলের কারণেই বানভাসি হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। সেই প্রেক্ষিতেই এলাকা পর্যবেক্ষণে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই বন্যার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মমতা জানান, ৩০ তারিখ ১২টার সময় হঠাৎ ৪৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয় পাঞ্চেত এবং মাইথন থেকে। এক ঘণ্টা পর আবার ১ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয় কাউকে কিছু না বলেই। এরপর আবার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ১ লক্ষ ২৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়। শুধু ৩০ তারিখেই প্রায় ৩ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। আবার ১ তারিখ সকালে প্রায় ১ লক্ষ কিউসেকের ওপর জল ছাড়া হয়েছে। গতবার যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তখন ডিভিসি ১ লক্ষ ১২ হাজার কিউসেক মত জল ছেড়েছিল, কিন্তু এবার প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলেই দাবি করেন তিনি। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, প্লাবন রোধ করতে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ পুকুর কাটা হয়েছে। কিন্তু এত পরিমাণ জল ছাড়ার কারণে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়েছে। তিনি বলছেন, জল না নামতেই আরও জল ছাড়া হয়েছে, আগুনের ওপর আগুন, জলের ওপর জল।
মমতার আরও দাবি, এই জল ছাড়ার কারণে ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে ৮ টি জেলা। হাওড়া, হুগলী থেকে শুরু করে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, দুই বর্ধমান জেলা প্লাবিত হয়েছে, কমপক্ষে ১ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৪ লক্ষ মানুষকে অন্যত্র সরানো হয়েছে বলে জানান তিনি। বছরে ডিভিসি চারবার করে জল ছাড়ছে বলেও দাবি করেন তিনি। এই প্রেক্ষিতেই মমতার হুঁশিয়ারি, আগামী দিনে হয়ত ডিভিসির থেকে ক্ষতিপূরণ চাইতে হতে পারে তাঁকে। এছাড়াও ঝাড়খণ্ড সরকারের কাছে তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন যাতে তারা তাদের রাজ্যের বাঁধ সংস্কার করে।