কলকাতা: শুভেন্দু অধিকারী সহ গোটা অধিকারী পরিবারের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে যখন জল্পনা চলছে তার মধ্যেই মেদিনীপুরে সভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পূর্ণেন্দু বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে একের পর এক ইস্যুতে কেন্দ্রকে নিশানা করলেন তিনি। এদিন সভা থেকে সরাসরি বিজেপি ও সিপিএমকে তিনি নিশানা করেন। প্রশ্ন তোলেন কৃষি বিল নিয়ে।
সভায় বিজেপি ও সিপিএমকে টার্গেট করে মমতা বলেন, “সিপিএম আর বিজেপি, ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছ? ভাবছো এভাবেই চলবে? গালাগালি দিয়ে বেড়াচ্ছো, অনেক টাকা ছড়াচ্ছো, দাঙ্গা লাগাচ্ছো, মিথ্যে কথা বলছো, কুৎসা করছো, চক্রান্ত করছো, অপপ্রচার করছো, সরকার ভাঙছো, দল ভাঙছো, ঘর ভাঙছো, মানুষের ভালবাসা ভাঙছো… জেনে রেখে দাও ভারতবর্ষের মাটি থেকে উৎখাত হওয়ার সময় তোমাদের চলে এসেছে। আগে নিজেদের বাঁচাও। কৃষি বিল হয় প্রত্যাহার করো, নয় বিজেপি সরকার ভারত ছাড়ো। আজ আমরা একা নই। ভারতবর্ষ একই বলছে।”
এরপরই রেলের প্রাইভেটাইজেশন নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, রেল বিক্রি করে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত চলছে। তিনি বলেন, ৯০০টি প্রাইভেট ইন্ডাস্ট্রি তৈরি হয়েছে লুকিয়ে। “যে কোনও মুহূর্তে ভারতীয় রেল হয়ে যাবে সেল। আমরা ভারতীয় রেলের পাশে আছি। আমারা ভারতীয় রেলকে প্রাইভেটাইজ করতে দেব না। এই স্লোগান আপনাদের আন্দোলনে থাকবে।” বলেন মমতা। এরপর প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও বেসরকারিকরণের প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। এদিন তিনি বলেন, “আজকে বলছে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরির মতো ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাবে, প্রাইভেটাইজ হয়ে যাবে বলে শোনা যাচ্ছে। কোল ইন্ডিয়ায় লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কাজ করে। আজকে বলছে সেটা প্রাইভেটাইজেশন করে দেবে, বন্ধ করে দেবে। ব্যাঙ্ক মার্জ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের এখান থেকে হেড অফিস তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া- প্লেন বিক্রি, রেল বিক্তি, কয়লা বিক্রি, SAIL বিক্রি, প্রতিরক্ষা বিক্রি, চাষি বিক্রি, শ্রমিক বিক্রি, ব্যাঙ্ক বিক্রি। তবে থাকবে কি? জিজ্ঞাসা করুন কমরেডদের।”
এরপরই সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপিকে একহান নেন তিনি। বলেন, “আজকে তিনভাই এক হয়েছে বাংলায়। বামপন্থীদের মধ্যেও অনেক মানুষ রয়েছেন যারা বিজেপিকে সমর্থন করে না। আমি তাদের স্যালুট জানাই, সেলাম জানাই। কিন্তু সিপিএম নামে একটা রাজনৈতিক দল যাদের হার্মাদ এবং যারা হার্মাদ তৈরি করে কঙ্কালকাণ্ড করেছিল, কেশিয়ারি করেছিল, নেতাই করেছিল, সিঙ্গুর করেছিল, নন্দীগ্রাম করেছিল, আজকে তারাই হয়ে গিয়েছে বিজেপির সবচেয়ে বড় রক্ষক। আর বিজেপি হয়ে গিয়েছে সিবিএমের বড় ভক্ষক। আর কংগ্রেস কখনও সিপিএমের গালে, কখনও ব্যাঙের গালে, কখনও সাপের গালে চুমু খেয়ে হয়ে গিয়েছে তক্ষক।”