তৃণমূল না বিজেপি? পুলিশ লকআপে মৃত কিশোরের পরিচয় নিয়ে যুদ্ধ সৌমিত্র-অনুব্রতর

তৃণমূল না বিজেপি? পুলিশ লকআপে মৃত কিশোরের পরিচয় নিয়ে যুদ্ধ সৌমিত্র-অনুব্রতর

 

বোলপুর: পুলিশ হেফাজতে কিশোর শুভম মেহেনার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপাউতোর তুঙ্গে৷  ওই পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয় কী, তা নিয়ে তুমুল বিকবিতণ্ডা বিজেপি ও তৃণমূলের৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বিজেপি৷ এমনকী, মল্লারপুর অভিযানের আহ্বান জানিয়েছে যুব মোর্চা৷  গোটা ঘটনায় পাল্টা মাঠে নেমেছেন তৃণমূলের জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷

প্রথমে মোবাইল চুরি, পরে কয়েকটি বাড়ি চুরির ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে পুলিশের আটক করা৷ সেই দলে ছিল ১৪ বছরের কিশোর শুভম মেহেনা৷ বৃহস্পতিবার রাতে যার মৃত্যু হয়৷ আপাতভাবে এই মল্লারপুরের প্রেক্ষাপট এটাই৷ তবে ঘটনাটিতে রাজনৈতিক রং লাগায় বীরভূমের মাটি ফের উত্তপ্ত৷ শুক্রবার সকালেই বিজেপির তরফে শুভম মেহেনার মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ তুলে পথে নামে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব৷ তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের অত্যাচারের মৃত্যু হয়েছে শুভমের৷ এখানেই শেষ নয়, শনিবার মল্লারপুরে ১২ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে বিজেপি৷

এদিকে, বেলা বাড়তেই ঘটনাটিতে রাজনৈতিক উত্তাপের পারদ চড়তে শুরু করেছে৷ যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খান গোটা ঘটনার পিছনে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম জড়িয়ে দিয়ে রাজ্যের শাসক দল এবং পুলিশের বিরুদ্ধে একযোগে আক্রমণ শানান৷ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলের পরিবারের ছেলেরা পুলিশের হাতে অত্যাচারিত হবে, খুন হবে আর ওসি, নেতাদের ছেলেরা নিশ্চিন্তে থাকবে এটা হতে পারে না, আমরাও তাদের ছেলেদের আটকে রাখব৷’’ এখানেই শেষ নয়, থানা ঘেরাওয়ের পাশাপাশি মল্লারপুরের ঘটনা নিয়ে রাষ্ট্রপতি, তপশিলি জাতি, উপজাতি কমিশন, মানবধিকার কমিশনে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি৷ পাশাপাশি মল্লারপুর যাওয়ার আহ্বান জানান যুব মোর্চা সভাপতি৷

এদিকে, বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল আবার পরিবারটির বিজেপির সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা খারিজ করে দিয়েছেন৷ একইসঙ্গে তিনি জানান, ছেলের মৃত্যু নিয়ে পুলিশকে বয়ান দিয়ছেন মেহেনা পরিবারের সদস্যরা৷ তাঁর কথায়, ঘটনাটি নিয়ে দালালি করছে বিজেপি৷ শুভমের পরিবার জানিয়েছে, তাঁরা বিজেপি করেন না, তৃণমূলের সমর্থক৷

এদিকে, এসবের মধ্যে ছেলের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তির দাবি তুলেছে শুভমের পরিবারের লোকেরা৷ কেন তাঁদের পরিবারের সঙ্গে শুভমের বাবা মায়ের দেখা করতে দেওয়া হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মৃত শুভমের পরিবারের সদস্যরা৷ পরে অবশ্য বদলে গিয়েছে সমস্ত দাবিদাওয়া৷ শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারের সময় শুভমের বাবা ও মায়ের পাশে দেখা গিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে৷ তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতিতেই শুভমের বাবা ও মা দাবি করেছেন, তাঁদের সন্তান পুলিশ লকআপে আত্মহত্যা করেছে৷ এই নিয়ে তাঁদের আর কিছুই বলার নেই৷ কিন্তু, সকাল থেকেই কিশোরকে পুলিশ লকআপে পিটিয়ে মারার অভিযোগ তুলে পথ অবরোধ, আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ, ১২ ঘণ্টা বনধ ডেকেছিল বিজেপি৷ সকালে বিক্ষোভের পর বিকালে পরিবারের নয়া অবস্থান নতুন করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 4 =