কলকাতা: ‘বাংলাটা ঠিক আসে না!’ বিস্ময়করভাবে বাঙালি, বিশেষত বঙ্গ নেটিজেনদের কাছে কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের লেখা এই কবিতাটির দারুন কদর৷
‘বাংলা আবার ভাষা নাকি, নেই কোনও ‘চার্ম’ বেঙ্গলিতে
সহজ-সরল এই কথাটা লজ্জা কীসের মেনে নিতে?
ইংলিশ ভেরি ফ্যান্টাসটিক
হিন্দি সুইট সায়েন্টিফিক
বেঙ্গলি ইজ গ্ল্যামারলেস, ওর ‘প্লেস’ এদের পাশে না’
কবিতার মধ্যে থেকে এই লাইনগুলো এতটাই বাস্তব ও সময়োপযোগী যে আশপাশে একটু খেয়াল রাখলেই বুঝে যাবেন৷ কিন্তু সম্প্রতি টেলিভিশনে বাংলার জনপ্রিয় ক্যুইজ শো ‘দাদাগিরির’ মঞ্চে বিদেশিদের বাঙালিয়ানা দেখে কথায় কথায় ইংরাজি বলা বঙ্গবাসী বাঙালির আত্মসমালোচনার প্রয়োজন বোধ হলেও হতে পারে৷ এদের মধ্যেই এক প্রতিযোগিনী ছিলেন নীলিমা মণ্ডল৷ ওনার জন্য বেলজিয়ামে, বড় হয়েছেন নেদারল্যান্ডে, পড়াশোনার জন্য ছিলেন ফ্রান্সে, গবেষণা করেছেন আমেরিকার নিউইয়র্কে আর তারপর যেদিন বাংলার মাটিতে পা রেখেছেন আর ফিরে যাওয়া হয়নি স্বদেশে৷ অবশ্য ওনার কথায় ‘বিদেশে’৷
কাজের সূত্রে বাংলায় এসেছিলেন৷ এরপর বাঙালি পাত্র উজ্জ্বল মণ্ডলকে বিয়ে করে বাঙালি বাড়ির বধূ হয়ে চন্দননগরের বাসিন্দা হয়েছেন সেই ১৯৮৯ সালে৷ বাংলাটা ওনারও ‘ঠিক আসে না’ তবুও অনর্গল বাংলা ভাষাতেই কথা চালিয়ে গেলেন ‘দাদার’ সঙ্গে, অর্থাত্ অনুষ্ঠানের সঞ্চালক সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে৷ অনুষ্ঠানে নিজের সম্পর্কে জানালেন নানান কথা৷ পশ্চিমবঙ্গ তার কাছে এত পছন্দের কেন জানতে চাওয়া হলে নীলিম জানালেন এখানকার একাত্বতাই তার সবচেয়ে পছন্দের৷
তাইতো ৩২ জনের যৌথ পরিবারে মানিয়ে নিতে অসুবিধে হয় না এই বিদেশিনী বাঙালি বধূর৷ বিয়ের পর এই ৩২ বছরে মাত্র একবারই গেছেন নিজের পৈতৃক বাড়ি সূদুর বেলজিয়ামে৷ আপাদমস্তক বাঙালি নারীর সাজে এই বেলজিয়াম বাসীর বাংলা শুনে বিস্মিত হয়েছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই এমনকি স্বয়ং মহারাজও৷ শুধু বাংলা শুনে বিস্মিত নয়, জিতে নিলেন সেরার শিরোপা৷