কলকাতা: ইনভেস্টার ও ক্লাব কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরে ফুটবলই প্রায় বন্ধ হতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে। আজ ক্লাবের সামনে এই ইস্যুতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কর্তাদের পক্ষ এবং বিপক্ষের গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয় মারামারি, তুমূল বিক্ষোভ৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সমর্থকদের উপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ৷ টেনে হিঁচড়ে সমর্থকদের তোলা হয় প্রিজন ভ্যানে৷ সবমিলিয়ে একেবারেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সম্মুখীন ক্লাব তাঁবু। এই ঘটনায় ব্যাপক ভাবে মর্মাহত তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র। ফেসবুক লাইভে এসে তিনি ইস্টবেঙ্গলকে সাহায্য করার বার্তা দেন।
এদিন মদন বলেন, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে তিনি কোনও মতেই বিক্রি হতে দেবেন না। দরকার হলে বিধায়ক হিসেবে নিজের এক মাসের বেতন দিয়ে দেবেন তিনি। তাঁর কথায়, তিনি এটি তৃণমূল নেতা হিসেবে বলছে না, একজন ফুটবল প্রেমী হিসেবে বলছেন। সরকার বা দল কাউকে আলাদা চোখে দেখে না। মদন বলছেন, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে সমস্যা রয়েছে, তাঁদের কাছে স্পন্সর আনার টাকা নেই, তাই তিনি নিজের এক মাসের বেতন দিয়ে সাহায্য করতে পারেন। তিনি এও জানান, প্রায় ২০০০ সমর্থক এসে ভিড় করেছেন তাঁর দক্ষিণেশ্বরের অফিসের সামনে। তার মধ্যে পাঁচ-সাতশো মহিলাও রয়েছেন। প্রত্যেকের এক দাবি, ক্লাবকে কোনও কর্পোরেটের হাতে বিক্রি হতে দেব না। তিনি একজন সাধারণ বিধায়ক হিসেবে ওঁদের দাবিকে সমর্থন জানাচ্ছেন।
ব্যাখ্যা দিয়ে মদন বলেন, ক্লাব বিগত কয়েক বছরে কটা ট্রফি পায়নি তাতে কিছু আসে যায় না। বিশ্বভারতী কয়েক বছর খারাপ ফল করলে কী নাম বিক্রি হয়ে যাবে? রবীন্দ্রনাথের মূর্তি ভেঙ্গে দেওয়া হবে? না রবীন্দ্রভারতীর পড়ুয়ারা কয়েক বছর গানে ভাল না করলে সেটাও বিক্রি করে দেওয়া হবে? প্রশ্ন তোলেন তিনি। উল্লেখ্য, আজ লাল-হলুদ সমর্থকদের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের সাক্ষী থাকল লেসলি ক্লডিয়াস সরণী৷ ক্লাবকর্তাদের সমর্থনকারী গোষ্ঠীর সঙ্গে ক্লাবকর্তাদের বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতিতে শুরু হয়৷ পরে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের সামনে উপস্থিত হয় পুলিশের বিশাল বাহিনী৷ তাঁদের সঙ্গেও বচসায় জড়িয়ে পড়ে সমর্থকরা৷ হাতাহাতি শুরু হতেই লাঠি উঁচিয়ে সমর্থকদের ধাওয়া করে পুলিশ৷ ক্লাবের সামনে জড়ো হওয়া ভিড় ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়৷ এমনকী ঘোড়া নিয়ে মাঠে নামে পুলিশ৷ আইএসএল-এ ইস্টবেঙ্গলের খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তার প্রতিবাদে আজ পূর্বপরিকল্পিত ভাবেই ক্লাবের সামনে জড়ো হয়েছিলেন সমর্থকরা৷ সেই মতোই বিক্ষোভ চলছিল৷ এরই মাঝে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ বাধে৷ পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়৷ দু’পক্ষকে সরিয়ে দেওয়া হয়৷ অনেককে আটক করে লাল বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷