বেসুরো মদন মিত্র-অর্জুন সিং! কেন এমন কথা বলছেন তাঁরা? অর্জুন-বাণে কতটা অস্বস্তিতে তৃণমূল?

বেসুরো মদন মিত্র-অর্জুন সিং! কেন এমন কথা বলছেন তাঁরা? অর্জুন-বাণে কতটা অস্বস্তিতে তৃণমূল?

নিজস্ব প্রতিনিধি:  রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম কয়েক মাস আগে এমন কিছু মন্তব্য করেছিলেন যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বেশ চাঞ্চল্য তৈরি হয়। যদিও সেই অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটেছে। কিন্তু তাতে তৃণমূলের অস্বস্তি কাটছে না।

রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সরকারি  হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে সরব হয়েছেন শাসকদলেরই এক হেভিওয়েট বিধায়ক! যে ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যজুড়ে। তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র সরব হন রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম-এর বিরুদ্ধে। সরকারি ক্ষেত্রে এই হাসপাতালের চিকিৎসাকেই শ্রেষ্ঠ ধরা হয়। কিন্তু মদনের অভিযোগ, দালাল রাজ চলছে এসএসকেএম-এ। টাকা না দিলে বেড পাওয়া যায় না। এভাবেই এখানকার চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে সোচ্চার হন তিনি। শুধু তাই নয়, এটা বামফ্রন্ট সরকারের আমল হলে তিনি এক মিনিটের মধ্যে রোগী ভর্তি করিয়ে দিতেন পারতেন বলেও দাবি করেছিলেন মদন। যেভাবে শাসক দলের এই বিধায়ক রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেন, তাতে বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য সরকার।

তড়িঘড়ি শনিবার সকালেই এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে। সেখানে মদনের অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়। আর সেই রেশ কাটতে না কাটতেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া সাংসদ অর্জুন সিং। যেভাবে ব্যারাকপুরে সোনার দোকানে ঢুকে দুষ্কৃতীরা দোকান মালিকের ছেলেকে খুন করেছে তাতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অর্জুন। ঘটনা হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীও বটে। তাই অর্জুন পুলিশকে তীব্র আক্রমণ করে নিঃসন্দেহে মুখ্যমন্ত্রীকেই অস্বস্তিতে ফেলেছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এমন আচরণ কেন করছেন তাঁরা?

গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে ব্যারাকপুর কেন্দ্র থেকে জেতার পর তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন অর্জুন। এরপর থেকেই বিভিন্ন দুর্নীতির ইস্যুতে মারাত্মকভাবে বিদ্ধ হতে শুরু করেছে তৃণমূল সরকার। যে সমস্ত ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল। মাঠে ঘাটে, হাটে বাজারে সাধারণ মানুষ ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তবে কী হওয়া খারাপ বুঝেই অর্জুন তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে ফের বিজেপিতে যেতে চাইছেন? কারণ ইদানিং রাজ্য বা কেন্দ্রীয় বিজেপি  নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অর্জুনকে সেভাবে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। অথচ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীদের থেকেও বেশি সরব হয়েছেন তিনি। তাই অর্জুনের ফের  দলবদল নিয়ে নতুন করে জল্পনা ছড়াবে, এতে আর আশ্চর্য হওয়ার কি আছে! তাই এই সমস্ত সমস্যা তৃণমূল কীভাবে মেটাবে সেটা তাদেরই খুঁজে বের করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − twelve =