নিজস্ব সংবাদাদাতা, বাঁকুড়া: সেই লকডাউনের সময় তেকে বন্ধ হয়েছিল স্কুলগুলি৷ এখনও তা খোলেনি৷ শহর থেকে শহরতলির ছেলেমেয়েরা অনলাইনে ঘরে বসেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রামে যারা থাকেন৷ স্মার্টফোন কেনার ক্ষমতা তাদের নেই৷ তাই স্কুল বন্ধ মানে পড়াশোনাও বন্ধ৷ এভাবেই গোটা একটা বছর বৃথা গেছে৷ তাই গ্রামের পড়ুয়াদের ফের পড়াশোনা চালু করতে অভিনব এক উদ্যোগ নিলেন বাঁকুড়ার রানীবাঁধ ব্লকের মল্লিকডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দারাই৷
গ্রামের মল্লিক পরিবারের দুর্গামন্দিরে বসেছে স্কুল৷ সেখানেই খোলা আকাশের নীচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে পড়াশোনা করছে পড়ুয়ারা৷ পড়াশোনা করাচ্ছেন গ্রামের শিক্ষিত কাকা-জেঠারা৷ তাছাড়াও রয়েছেন গ্রামের শিক্ষকেরাও৷ শিক্ষকদের মতে করোনা কারণে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বর্তমানে তা অনেক স্বাভাবিক হয়েছে৷ সবই হচ্ছে শুধু স্কুল চালু হচ্ছে না৷ স্থানীয়রা বিডিওর কাছেও গিয়েছিল স্কুল খোলার দাবীতে। তবে তা মানেননি বিডিও৷ এখন এই স্কুলে ১৩৭ জন পড়ুয়ারা পড়াশোনা করছে৷ আরও অনেকে এখানে পড়তে আসবে বলে আশাবাদী এই মহান উদ্যোগের উদ্যোক্তা মধূসুদন মাহাতো৷
পড়ুয়াদের কথায়, স্কুল বন্ধ থাকায় সব পড়া ভুলে যাচ্ছিলাম, এই স্কুল শুরু হওয়ায় অনেক উপকার হচ্ছে৷ শারীরিক দুরত্ব মেনেই চলছে পঠনপাঠন৷ এই উদ্যোগ নিয়ে অভিভাবকদের মত যে এই উদ্যোগে অনেক উপকৃত হবে তাদের ছেলেমেয়েরা৷ কারণ তারা দরিদ্র তাই আলাদা করে টিউশন দেওয়ারও ক্ষমতা তাদের নেই৷ তাই স্কুল না খোলার ফলে ছেলেমেয়েরা একদম পড়াশোনা করছিল না৷
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মিটিং, মিছিল করছে, সরকারি মেলা হচ্ছে, জমায়েত হচ্ছে। তখন কোনও করোনাও নেই বিধিনিষেধও নেই৷ কিন্তু স্কুল খুলতে গেলেই বারবার দোহাই দেওয়া হচ্ছে অতিমারীর৷ এভাবে চলতে থাকলে গরিব ঘরের ছেলেমেয়েদের কী হবে? কিভাবে পড়াশোনা করবে তারা? সেসব ভেবে এই অভিনব সিদ্ধান্ত নেয় জঙ্গলহলের এই প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দারা৷