কলকাতা: দলের অন্দরে জমতে থাকা ক্ষোভ-দ্বন্দ্বের কারণেই দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। আর শিবির পরিবর্তনের পরে মঞ্চ থেকে সরাসরি বাক-আক্রমণ থেকে শুরু করে শুভেন্দু-অভিষেক আইনি লড়াই- সবই অব্যহত রয়েছে। এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আইনি নোটিশ পাঠালেন শুভেন্দু অধিকারী। অভিোগ, বুধবার একটি জনসভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীর নাম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আর তার জেরেই এই আইনি পদক্ষেপ নিলেন শুভেন্দু। যদিও তাঁর নামে অপপ্রচার করার অভিযোগ তুলে এর আগে শুভেন্দুকে আইনি নোটিস দিয়েছিলেন অভিষেক৷
অভিযোগ, গত বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলতলিতে একটি দলীয় সভা থেকে রাজ্য যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি বিজেপিতে যোগদান করা শুভেন্দু অধিকারীর সম্বন্ধে কিছু অশালীন মন্তব্য করেন। ওইদিন সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নারদা কেলেঙ্কারিতে তুই সরাসরি যুক্ত, আমি তোর বিরুদ্ধে প্রমাণ দিয়েছি। তুই ঘুষখোর শুভেন্দু অধিকারী৷” এছাড়াও তিনি এদিন শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করে বলেন, “ক্ষমতা থাকলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করে প্রমাণ দে। প্রমাণিত হলে আমি মৃত্যুবরণ করব। বল, পারবি তুই?”
সভামঞ্চ থেকে নাম করে শুভেন্দু অধিকারীকে এভাবে ‘ব্যক্তিগত’ আক্রমণের জেরেই শুক্রবার একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী সৌমেন্দ্যু মুখোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীকে নাম ধরে তুই-তোকারী করাকে ‘অশালীন’ বলে মন্তব্য করেছেন। এছাড়াও এই নোটিসে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘মৃত্যুবরণ’ করার কথা একটি আত্মহত্যার প্ররোচনামূলক কথা, যার বক্তা মানসিক আইন অনুযায়ী চিকিৎসাযোগ্য এক ব্যক্তি। এছাড়াও এটিকে একটি ফৌজদারি শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও বলা হয়েছে এই নোটিসে। এই নোটিসের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইন শেখার জন্য বেশ কিছু আইনের বইও পাঠানো হয়েছে, এমনটাই জানান শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী সৌমেন্দ্যু মুখোপাধ্যায়। এছাড়াও নোটিসে বলা হয়েছে, আইন না জেনে এমন মন্তব্য করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, যা আদালতের অবমাননাকর একটি অপরাধ। এসবের পর শুভেন্দুর আইনজীবী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানসিক সুস্থতা কামনা করেন৷
প্রকাশ্য জনসভা থেকে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ ছাড়া দুর্নীতি-তোলাবাজির অভিযোগ তোলা হচ্ছে৷ মূলত, এরই প্রতিবাদ জানিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে গত সপ্তাহে আইনি নোটিস পাঠান ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আইনি নোটিস পাঠিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতেও বলা হয়৷