কলকাতা: পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর তৈরি ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (ISF) কতটা সার্কুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ? বিষয়টি নিয়ে বহু চর্চা হচ্ছে। ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক জোট হিসাবে বাম-কংগ্রেস কেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (ISF) কে নিজের পাশে দাঁড়ানোর জায়গা করে দিয়েছে। তাই নিয়ে আম জনতার মাঝে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর কথাবার্তা হচ্ছে। সিনিয়ার কংগ্রেস নেতা এবং দেশের প্রাক্তন মন্ত্রী আনন্দ শর্মা সরাসরি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন। কিন্তু বামফ্রন্ট আদৌ আব্বাস সিদ্দিকীকে মৌলবাদী বা সাম্প্রদায়িক শক্তি হিসেবে দেখছে না। ফ্রন্ট সূত্রের খবর, আব্বাসের যোগদান নিয়ে সিপিএম, বামদলগুলি এবং কংগ্রেসের সাথে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। যদিও আব্বাসকে নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী এখনও সবুজ সঙ্কেত দেননি।
বামফ্রন্টের মতে আই এস এফ – এর প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হলেই বোঝা যাবে যে তারা শুধুই ধর্মীয় সংখ্যালঘু বা মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করছে না। তফসিলি জাতি, উপজাতি, জনজাতি, সাধারণ গরিব মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছেন আব্বাস। যদিও, ‘ভাইজান’ – পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর জন্য সব থেকে বেশি অখুশি হয়তো কংগ্রেস সভাপতি, সাংসদ অধীর চৌধুরি। মালদা, মুর্শিদাবাদ, হুগলী, নদিয়া এবং দুই পরগণায় সংখ্যালঘু জনতার মধ্যে ভাইজানের জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। অধীরের গড় মুর্শিদাবাদে ভোট নেবে ভাইজান, তা যে তিনি মানবেন না তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু বামফ্রন্ট অধীরের সঙ্গে ভাইজানকে নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করে। সেই কারণেই পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে বামফ্রন্টের জোট হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস এখনও ওই জোট নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত।
এখানে একটি ভিন্ন রাজনৈতিক মত উঠে এসেছে। লোকসভা নির্বাচন ২০১৯ সালে বহরমপুরে অধীর এবং মালদা দক্ষিণের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরির আসনে সিপিএম প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু কথা রাখেনি কংগ্রেস – মহম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধে রায়গঞ্জে এবং বদ্দুরুদজা খানের বিরুদ্ধে যথাক্রমে দীপা দাসমুন্সি এবং আবু হেনাকে প্রার্থী করে কংগ্রেস। মনে রাখা প্রয়োজন রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ সিপিএমের জেতা আসন ছিল। কংগ্রেস দয়ামায়া দেখায় নি। সেটাই নাকি ছিল জোটের শর্ত। যদিও মুর্শিদাবাদে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী দিয়েছিল।
এদিকে, ব্রিগেড সমাবেশে বৈঠকের দিন একটি যে ভুল হয়েছে তা মানছে বামফ্রন্ট। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ISF এর সভাপতি শিমুল সরেন। তাঁকে কিছুটা সময় বলতে দিলে এই বিভ্রান্তি তৈরি হতে হত না বলে মনে করেন বাম নেতারা। তাদের মতে মঞ্চে শুধু আব্বাস বক্তব্য বক্তব্য রেখেছে। তাতে মনে হচ্ছে তিনি একটি ধর্মের প্রতিনিধি। কিন্তু ISF এর সভাপতি শিমুল সরেন বক্তব্য রাখতে পারলে মানুষ বিভ্রান্ত হত না।