গতবারের চেয়ে কিছুটা বেশি আসন জিতেছে বাম-কংগ্রেস! লোকসভায় কী স্ট্র্যাটেজি জোটের?

গতবারের চেয়ে কিছুটা বেশি আসন জিতেছে বাম-কংগ্রেস! লোকসভায় কী স্ট্র্যাটেজি জোটের?

কলকাতা:  পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে কাটাছেঁড়ার পালা। এবার প্রচারে নেমে বিজেপির পাশাপাশি বাম-কংগ্রেস দাবি করেছিল তাদের ফল বেশ ভাল হবে। তবে যে দাবি তারা করেছিল তার ধারে কাছে পৌঁছতে পারেনি বিরোধীরা। যদিও ভোট পরিসংখ্যান বলছে গতবারের চেয়ে কিছুটা হলেও বেশি আসন জিতেছে বিজেপি, বাম এবং কংগ্রেস।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছিল তৃণমূল। বাকি যে ৬৬ শতাংশ আসনে ভোট হয়েছিল তার মধ্যে সিপিএম তথা বামেরা ১৭১২ এবং কংগ্রেস ১০৬৫ আসনে জয়ী হয়েছিল। পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে বামেরা ১২৯ এবং কংগ্রেস ১৩১ আসনে জয় পেয়েছিল। এছাড়া জেলা পরিষদে বামেরা দুই এবং কংগ্রেস পাঁচটি আসনে জয় পেয়েছিল। সেই জায়গা থেকে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সামান্য হলেও বেশি আসনে জিতেছে বাম এবং কংগ্রেস। সিপিএম গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩১৪১, পঞ্চায়েত সমিতিতে ১৮৯ ও জেলা পরিষদে তিনটি আসন পেয়েছে। অন্যদিকে কংগ্রেস গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৫৭৩, পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৬৪ এবং জেলা পরিষদে ১৩টি আসন পেয়েছে। এছাড়া সিপিএম ৪১ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জিতেছে। আর কংগ্রেস জিতেছে ১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে। এর পাশাপাশি তিনটি পঞ্চায়েত সমিতি পেয়েছে সিপিএম। তাই দেখা যাচ্ছে কিছুটা হলেও গতবারের থেকে বেশি আসন পেয়েছে বাম এবং কংগ্রেস।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট করে লড়বে সেটা আগেই ঠিক হয়। কিন্তু জোট হলেও কয়েক হাজার আসনে বাম এবং কংগ্রেস দু’পক্ষই প্রার্থী দেয়। অর্থাৎ ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রত্যেকটি আসনে সার্বিক জোট দেখা যায়নি। রাজনৈতিক মহল মনে করে মসৃণ জোট হলে বাম-কংগ্রেসের ফলাফল আরেকটু ভাল হতো। তাই লোকসভা নির্বাচনের দশ মাস আগে এই ফলাফল থেকে শিক্ষা নিয়ে বাম-কংগ্রেস নতুন ভাবে গোটা বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। লোকসভার ৪২টি আসনে বহু আগে থেকেই মসৃণ জোটের কথা ঘোষণা করে তাদের নামা উচিত বলে দুই দলের কর্মী-সমর্থকরা মনে করছেন।

সেক্ষেত্রে এখন থেকেই দু’দলের শক্তি অনুযায়ী কেন্দ্র বেছে বেছে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলেও তাঁদের দাবি। সেই সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের দাবি বেনজির সন্ত্রাস হয়েছে বলেই তাদের ফল এত খারাপ হয়েছে। না হলে আশাতীত ভাল ফল হতো বলে তাঁরা মনে করছেন। সেই সঙ্গে শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, সন্ত্রাস উপেক্ষা করে বিভিন্ন জেলায় বাম-কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা লড়াই করেছেন শাসক দলের সঙ্গে। সবচেয়ে বড় কথা রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির মতো অর্থবল ছিল না বাম-কংগ্রেসের। কেন্দ্রে বিজেপি সরকার থাকায় অনেক সুবিধা পায় রাজ্য বিজেপি। তাই প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে থেকেই বাম-কংগ্রেসকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়তে হয়েছে। সেই জায়গা থেকে গতবারের নিরিখে বাম-কংগ্রেসের ফল নতুন করে আর খারাপ হয়নি। উল্টে কিছু আসন বেশি পেয়েছে তারা। তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে বাম- কংগ্রেস কীভাবে স্ট্রাটেজি তৈরি করে সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *