কলকাতা: ‘আমি বিশ্বাসঘাতক নই’, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনপূর্ব দলবদলের মরসুমে তৃণমূলের একমাত্র সৈনিক কুণাল ঘোষ। শনিবার নিজের ফেসবুকে একটি দীর্ঘ লেখা পোস্ট করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র। সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিজের পুরনো একটি ছবিও। তবে তিনি এও বলেছেন, “তৃণমূল পরিবারে যদি কেউ অপমানিত, লাঞ্ছিত, অত্যাচারিত হয়ে থাকে তাহলে সেটা আমি। আমাকে বিনা দোষে বলি করা হয়েছে।”
গত বছর করোনা মহামারীর পর থেকেই রাজ্য জুড়ে ধীরে ধীরে বাজতে শুরু করেছে বিধানসভা ভোটের দামামা। “দলে থেকে কাজ করতে পারছি না”, একই সুরে একে একে বেসুরো হয়ে তৃণমূল ছেড়েছেন দলের বড় বড় নেতারা। শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়া, শোভন চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক বিধায়ক-মন্ত্রী-সাংসদরা গিয়ে নাম লিখিয়েছেন বিজেপিতে। এই পরিস্থিতিতে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে শুভেন্দু-রাজীবদের সরাসরি আক্রমণ করেছেন কুণাল।
যদিও শনিবার দলের প্রতি নিজের ক্ষোভ, ভালোবাসা ও আনুগত্য প্রকাশ করলেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ। একটা সময়ে সারদাকাণ্ডে নাম জড়ালে বেশ কিছুদিন জেলবন্দি থাকতে হয় তাকে। সেই ক্ষোভ থেকেই এদিন কুণাল লেখেন, “আমি এই নির্বাচনটা প্রাণপাত পরিশ্রম করে দেখিয়ে দিতে চাই, কুণাল ঘোষ আগেও কঠিন সময় ছিল। আজও ধর্মযুদ্ধে দলের মঞ্চে আছে। আমি বিশ্বাসঘাতক নই। আমার ক্ষোভ, অভিমান আছে। প্রতিবাদ আছে। সেটা আমি দলের এবং মমতাদির সঙ্গে বুঝে নেব ভোটের পর। যখন দিদি আবার তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়ে আসবেন। তার আগে পর্যন্ত আমি দলের সৈনিক হিসেবে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে কর্তব্য পালন করব। প্রমাণ রাখতে চাই আমি বেইমান, সুবিধাবাদীদের তালিকায় পড়ি না।”
দলবদলু নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি লিখেছেন, “যারা ষড়যন্ত্রী তাদের ৯০ শতাংশ এখন বিজেপিতে। কারা সব ক্ষমতা ভোগের পর ক্ষোভের কথা বলছে? আমার থেকে বেশি ক্ষোভ কারোর থাকতে পারে না। সিবিআই, ইডি থেকে বাঁচতে কেউ কেউ গেছে। আর কয়েকজন যার জন্য যাচ্ছে, শুনলে চোখ কপালে উঠছে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “আমি তৃণমূল কংগ্রেসের মঞ্চে প্রচার করছি সম্পূর্ণ মন থেকে। পুরনো দিনের একজন সৈনিক হিসেবে। আমি চাই সব ষড়যন্ত্রকে পরাজিত করে তৃণমূল জিতুক। আমি সাধারণ কর্মী এবং প্রচারক হিসেবে থাকব। কোনও বিধানসভা, রাজ্যসভার প্রার্থী পদে আমার আগ্রহ নেই। নিদেনপক্ষে প্রশাসনিক কোনও কমিটিতেও আমার আগ্রহ ছিল না। আমি শুধু দলের একজন সৈনিক হিসেবে লড়াইটা লড়ব। দয়া করে এর সঙ্গে বিধানসভা রাজ্যসভার জল্পনা মিশিয়ে আমার আবেগ এবং আমার পরীক্ষাকে ছোট করবেন না।”