কলকাতা: শুক্রবার পার্থ-অর্পিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ফের টান টান উত্তেজনা। একদিকে যখন নিজেকে নির্দোষ বলে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলেছেন পার্থ, অন্যদিকে ঠিক তখনই জোকা হাসপাতালের সামনেই কাঁদতে কাঁদতে রাস্তায় বসে পড়লেন তাঁরই ‘ঘনিষ্ঠ’ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে এই মুহূর্তে তাঁরা দুজনেই ইডি হেফাজতে। এসএসসি দুর্নীতি প্রসঙ্গে চলছে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ। তার মধ্যেই আদালতের নির্দেশে শুক্রবার সকালে পার্থ অর্পিতাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। আর সেখানে দুজনের আচরণ নিয়েই শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। অন্যদিকে ইতিমধ্যেই পার্থর প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ।
এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে চিৎকার করে পরপর তিনবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’ সেই প্রসঙ্গেই কুনাল ঘোষের পাল্টা দাবি, কেউ নির্দোষ হলে সেটা প্রথম প্রতিক্রিয়াতেই বলা উচিত। গ্রেফতারের ছদিন পর এই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেওয়া একটু অস্বাভাবিক। তাঁর কথায়, ‘যদি সত্যিই কিছু বলার থাকে তাহলে তো সেটা প্রথম দিনেই বলবে। এতদিন চুপ করে থেকে এখন মুখ খোলাটা একটু অস্বাভাবিক। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনে লড়ার অধিকার ১০০ বার থাকছে। যদি তিনি অন্যায় করে না থাকেন তাহলে প্রথম দিনেই কেন চিৎকার করে বললেন না, আমার সঙ্গে ষড়যন্ত্র হচ্ছে আমি নির্দোষ। সেটা বলতে যদি সাত দিন সময় লাগে তাহলে সাধারণের মনে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠবে, ‘এতদিন কেন বলেননি’।’
উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারী প্রসঙ্গে প্রথম থেকেই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে এসেছেন তাঁরই সহকর্মী তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুনাল ঘোষ। বুধবার রাতে পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘড়িয়া ফ্ল্যাট থেকে ফের মোটা অঙ্কের টাকা পাওয়ার পরেই কুনাল ঘোষ প্রতিক্রিয়াস্বরূপ জানান, ‘ এটা রাজ্যের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক একটি ছবি। এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত।’ এর সঙ্গেই তিনি প্রার্থর নাম না করেই বলেন, ‘উনি এতবার সুযোগ পাচ্ছেন, সংবাদমাধ্যমের সামনে এত কথা বলছেন এটা কেন বলতে পারছেন না যে, ওনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’ এরপরেই শুক্রবার সকালে মুখ খোলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সাংবাদিকদের দেখেই হুইল চেয়ার থেকে চিৎকার করে বলেন ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার’।
অন্যদিকে এদিন স্বাস্থ্য পরীক্ষার আগে আগেই নাটকীয় কান্ড ঘটিয়েছেন পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। হাসপাতাল চত্বরে তাঁর গাড়ি পৌঁছতেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়েন রাস্তায়। এরপর তাঁকে কোনওরকমে তুলে হুইলচেয়ারে বসিয়ে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তিনি ঠিক কি কারণে কাঁদছিলেন তা এখনো স্পষ্ট নয়।