kunal ghosh
নিজস্ব প্রতিনিধি: তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলের অন্যতম প্রধান মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। তিনি যা বলেছেন তাতে কার্যত এটাই স্পষ্ট হয়েছে যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একগুচ্ছ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে দলে প্রবীণদের গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন তা নিয়েও মুখ খুলেছেন কুণাল। একদিকে কুণাল বলছেন মমতাই তৃণমূলের প্রথম ও শেষ কথা। আবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব সম্পর্কেও ব্যাপক আস্থা দেখিয়েছেন তিনি।
ঘটনা হল তৃণমূল রাজনীতিতে অভিষেকের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বৃত্তের ব্যক্তি বলেই পরিচিত কুণাল। সারদা মামলায় জেলযাত্রার পর মূলত অভিষেকের ‘হাত ধরেই’ রাজ্য রাজনীতিতে কামব্যাক হয় কুণালের, এমনটাই মনে করে রাজনৈতিক মহল। এরপর কুণালকে দলের অন্যতম মুখপাত্র ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিয়মিত সংবাদ মাধ্যমে কথা বলতে দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে নেতাজি ইন্ডোরের সভায় অভিষেকের ছবি না থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন কুণাল, তাতে ছত্রে ছত্রে অভিষেকের প্রতি আস্থাই ধরা পড়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে কুণাল যে বিস্ফোরক বক্তব্য রেখেছেন তার নেপথ্যে কে রয়েছেন? মেঘের আড়ালে থেকে কেউ কী এসব করাচ্ছেন? যদি সত্যিই তাই হবে তাহলে মেঘের আড়ালে থাকা সেই মেঘনাদ কে? এই বিষয়টি নিয়ে জল্পনা এখন তুঙ্গে।
কুণাল ঘোষের পেশা সাংবাদিকতা। একটা সময় তৃণমূলের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তিনি। যদিও সাংবাদিকতা পেশা তিনি কোনও দিনই ছাড়েননি। সেই জায়গা থেকে তৃণমূলে যেভাবে হঠাৎই প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন তিনি, তা নিয়ে দলের একাংশ আড়ালে আবডালে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলে শোনা যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, মূলত দলের আদি নেতাদের একাংশ তাঁকে সেভাবে মেনে নিতে পারেন না। তবে কী কুণাল তাঁদের প্রতিই অনাস্থা প্রকাশ করেছেন নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে? ঘটনা হল তৃণমূলে আদি বনাম প্রবীণের দ্বন্দ্ব বহুদিন ধরে শুরু হয়েছে বলে শোনা যায়। অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূলের নবীন প্রজন্মের নেতারা মাঠে ময়দানে নেমে চুটিয়ে কাজ করছেন এটা রাজ্য জুড়েই দেখা যায়। তা যে দলের পুরনো নেতাদের একাংশ মেনে নিতে পারছেন না সেটা বহুবারই প্রকাশ্যে এসেছে। ‘যুব তৃণমূল’ বনাম ‘মাদার তৃণমূল’ দ্বন্দ্বের কথা বহুবার প্রকাশ্যে এসেছে। তবে কী সেই দ্বন্দ্ব আগামী দিনে আরও প্রকট হয়ে উঠবে? সেই ইঙ্গিতই কী পাওয়া গেল কুণালের বক্তব্যে? এই বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে কুণালের বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার বহু প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।