কেন এই রাজ্যে পারিবারিক আদালত নেই? ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট

এই রাজ্যে কোনও ফ্যামিলি কোর্ট  কেন নেই ? নিজের ছেলেকে দেখতে চেয়ে এক বাবার দায়ের করা মামলায় ,সোমবার এই প্রশ্ন তুলে বিস্ময় প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট।  মামলার নিষ্পত্তি করতে জেলা আদালতকে এক মাস সময়সীমা বেঁধে  দেওয়ার পাশাপাশি মামলাকারীকে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সেখানে মামলা দায়ের করতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। 

কলকাতা: এই রাজ্যে কোনও ফ্যামিলি কোর্ট  কেন নেই ? নিজের ছেলেকে দেখতে চেয়ে এক বাবার দায়ের করা মামলায় ,সোমবার এই প্রশ্ন তুলে বিস্ময় প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট।  মামলার নিষ্পত্তি করতে জেলা আদালতকে এক মাস সময়সীমা বেঁধে  দেওয়ার পাশাপাশি মামলাকারীকে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সেখানে মামলা দায়ের করতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। 

এদিন এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করণ নায়ার রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বিস্ময় প্রকাশ করে আরও মন্তব্য করে, 'এরাজ্যে এত পারিবারিক বিবাদ সংক্রান্ত মামলা দায়ের হয়, যেগুলো ফ্যামিলি কোর্ট থাকলে ,দ্রুত নিষ্পত্তি হতে পারে। অন্যান্য রাজ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক ফ্যামিলি কোর্ট থাকলেও, এ রাজ্য তার ব্যতিক্রম কেন? এই প্রশ্ন  তোলেন  বিচারপতিরা।

 প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে একটি পারিবারিক মামলার শুনানিতে  এদিন  মামলাকারীর  তরফের আইনজীবী শুভাশিস দাশগুপ্ত জানান, যেহেতু মামলাকারী হাওড়া আদালতের বিচারক্ষেত্রের এলাকার মধ্যে থাকেন আর পারিবারিক আদালত শুধুমাত্র রয়েছে, ব্যাংকশাল আদালতে সেজন্য তিনি সেখানে উপস্থিত হতে পারেননি। আইনজীবীর বক্তব্য শুনে রাজ্যের উদ্দেশ্যে উষ্মা প্রকাশ করে বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, কেন আদলতগুলোতে পারিবারিক কোর্ট নেই? অবশ্য এপ্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি রাজ্যের পক্ষের আইনজীবীরা। 
এরপরই এই মামলাতেই এমন মন্তব্য করে রাজ্যের আইনী ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার নিষ্পত্তির জন্য জেলা আদালতকে এক মাস সময়  দেওয়ার পাশাপাশি, মামলাকারীকেও হাওড়া জেলা আদালতে গিয়ে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে মামলা দায়ের করতে  নির্দেশ দেয়। 

হাওড়ার বাসিন্দা  পেশায় সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মিতেশকুমার দাসের সঙ্গে ১২ বছর আগে বিয়ে হয় এক স্কুল শিক্ষিকার। কিন্তু পারিবারিক অশান্তির কারণে এখন আর এই দম্পতি এক সঙ্গে থাকেন না।  এমনকী,  তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাও  নিম্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে । তিনি আরও জানান, ২০১৭ সাল থেকে ঘর ছাড়া ওই ব্যক্তি।  শুধু তাই নয়, বাড়ির লোনও তিনিই মেটাচ্ছেন, তার সত্বেও এত বছর ধরে নিজেকে ছেলেকে দেখতে পাচ্ছেন না-তিনি। তাই ছেলেকে দেখতে চাওয়ার পাশাপাশি ছেলের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আদালতে হেবিয়াস কার্পাসে মামলা দায়ের করেন ওই ব্যক্তি।

আদালত সূত্রের জানা গিয়েছে, এই রাজ্যে শুধুমাত্র কলকাতা নগর দায়রা আদালতেই ফ্যামিলি কোর্ট বা পারিবারিক আদালত রয়েছে। বাকি কোনও জেলার আদালতে এই ফ্যামিলি কোর্ট নেই। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র কলকাতার মামলার ক্ষেত্রে ফ্যামিলি কোর্টে মামলা দায়েরের সুযোগ রয়েছে। বাকি জেলার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছে রাজ্যবাসী। ফলে পারিবারিক মামলার নিষ্পত্তিও হচ্ছে শ্লথ গতিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *