ক্ষুধার্তদের খিদের জ্বালা মেটাতে হাজির ‘খুশির ঝুড়ি’

ক্ষুধার্তদের খিদের জ্বালা মেটাতে হাজির ‘খুশির ঝুড়ি’

বনগাঁ:  গরিব মানুষগুলো যখন খিদের জ্বালায় কষ্ট পায়, তখন বড্ড খারাপ লাগে তাঁর৷ খিদের জ্বালা কী, তা তিনি ভাল করেই বোঝেন৷ তাই খেতে না পাওয়া মানুষগুলোর পেট ভরাতে তিনি নিয়ে এসেছেন ‘ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খুশির ঝুড়ি’৷ নানা ব্র্যান্ডের হরেক রকম স্বাদের বিস্কুট রয়েছে তাতে৷ খিদের জ্বালায় যখন অসহায় মানুষগুলো অস্থির হয়ে পড়ে, তখন তাঁরা ভিড় করেন দোকানের সামনে৷ আর তাঁদের হাতে খুশির ঝুড়ি তুলে দেন প্রিয়া নাথ৷ পেট ভরলে দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেন হতভাগা মানুষগুলো৷ প্রিয়া দেবী ও তাঁর স্বামী সুব্রত বাবুও তাঁদের ফের আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান৷ বলেন, ‘আবার এসো’৷   

আরও পড়ুন- ভোট-পরবর্তী হিংসা: কলকাতা হাইকোর্টে স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিল CBI-SIT

প্রিয়া দেবীর কথায়, ‘‘খিদের জ্বালা জানি আমি। তাই যাঁদের খাওয়া জোটে না, রোজ তাঁদের জন্য এইটুকু ক্ষুন্নিবৃত্তির আয়োজন করি সাধ্যমতো৷’’ বনগাঁ চম্পক সরণি মোড়ে ছোট্ট একটি দোকান রয়েছে নাথ দম্পতির। পাশাপাশি খাবারের হোম ডেলিভারি ব্যবসাও রয়েছে তাঁদের। কাজের ফাঁকে দোকানও সামলাতেন প্রিয়াদেবী। সেই সময় দেখতেন বহু মানুষ তাঁদের দোকানে এসে খাবার চাইছেন। সাধ্যমতো তিনি তাঁদের হাতে খাবার তুলে দিতেন। তবে মনে মনে ভাবতেন, এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁরা হয়তো লজ্জায় খাবারটুকুও চাইতে পারেন না। তাঁদের কী হবে? এই ভাবনা থেকেই তিনি দোকানের সামনে একটি বোর্ড ঝুলিয়ে দেন। তা দেখার পর এখন দোকানের সামনে বেশ ভালই ভিড় হয়৷ বহু মানুষ খাবারের খোঁজে আসেন৷ খিদের জ্বালা মেটাতে হাত পেতে নেন ‘ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খুশির ঝুড়ি’৷

মানবদরদী এই কাজে সর্বদাই স্ত্রীকে উৎসাহ জুগিয়েছেন তাঁর স্বামী সুব্রত নাথ। তাঁর কথায়, ‘‘এটা সম্পূর্ণ ওঁর চিন্তাভাবনা। অনেকেই দোকানে এসে খাবার নিয়ে যান৷’’ প্রিয়াদেবীর এই কাজ সকলের বাহবা কুড়িয়েছে৷ শুধু তাই নয়, তাঁর এই উদ্যোগে সঙ্গী হওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন বহু মানুষও৷ নাথ দম্পতিও জানিয়েছেন, বড় হৃদয়ের কোনও মানুষ এই ছোট্ট খুশির ঝুড়িতে খাদ্যসামগ্রী রাখতে চানইলে তাঁকে স্বাগত। 

প্রিয়াদেবীর দোকান থেকে প্রায় প্রতি দিনই বিস্কুটের ঝুড়ি নেন সেন্টু৷ বয়স পাঁচ৷ বাবা নেই৷ মা স্টেশনে ভিক্ষা করেন৷ প্রতিদিন সকালে ঝুড়ি থেকে বিস্কুট তুলে খায় সে৷ ভালোবাসে কমলা ক্রিম দেওয়া বিস্কুট৷  
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 4 =