তিয়াষা গুপ্ত: কলকাতায় এসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। ভোটে বিপুল জয়ের পর অ-কংগ্রেসি ও অ-বিজেপি জোট গড়তে মরিয়া তিনি। এদিকে ৫ রাজ্যে ফল ঘোষণার আগের দিনই দিল্লিতে চন্দ্রবাবু নায়ডুর ডাকে ২১টি বিরোধী দলের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন তৃণমূলনেত্রী। বিজেপিকে ঠেকাতে শেষপর্যন্ত যদি ২ টো পৃথক জোট হয়, তাহলে মমতা কোন দিকে থাকবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। চলছে লাভের অঙ্ক বুঝে নেওয়ার পালা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
তেলেঙ্গানা নতুন ইনিংস শুরু করার পর থেকে অ-কংগ্রেসি ও অ-বিজেপি জোট গঠন করতে বিভিন্ন আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে দেখা করছেন কেসিআর। এদিকে দিল্লির রাজনীতিতে বিজেপিকে ঠাকাতে অনেকদিন ধরেই জোট গঠনের জন্য সলতে পাকানোর কাজ চলছে। মমতা প্রথম থেকেই তাতে শামিল। বিভিন্ন সময় দিল্লি গিয়ে রাহুল-সোনিয়াদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। সেই জোট যদি শেষপর্যন্ত বাস্তবের মুখ দেখে তাহলে নেতৃত্বে কে থাকবেন, তা নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন ছিল। মমতা, মায়াবতীর মতো সিনিয়র নেত্রীরা কি রাহুলের নেতৃত্ব মেনে নেবেন?
সেই জোট গঠনের শুরু থেকে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাউকে প্রজেক্ট করা হবে না। ফলাফলের নিরিখে ঠিক করা হবে জোটের নেতা। সম্প্রতি অন্য ছবি দেখা যাচ্ছে। দিল্লিতে বিরোধীদের বৈঠকের পরেও রাহুলের নেতৃত্বের পক্ষে সওয়াল করেন নায়ডু। এমনকী এরপরে তামিলনাড়ুতে করুনানিধির মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে রাহুলের নাম প্রস্তাব করেন স্ট্যালিন। ফলে প্রশ্ন মমতা কি এত সহজে রাহুলের নেতৃত্ব মেনে নেবেন?
Telangana CM K. C Rao after meeting with West Bengal CM Mamata Banerjee: Our dialogue will continue, very shortly we will come out with a concrete plan. We are discussing things. I will continue with my efforts. pic.twitter.com/cXgl84rmyz
— ANI (@ANI) December 24, 2018
বিরোধীদের সেই বৈঠকে যাননি মায়াবতী। এমনকী কোনো প্রতিনিধি পাঠাননি সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব। রাহুল-নায়ডুদের বিজেপি ঠেকাও বৈঠকে নেতত্ব দিতে অনেকগুলি নাম উঠে আসছে। এই সুযোগে কেসিআর কি আবার বাজিমাত করে বেড়িয়ে যাবেন?
দেখা যাক। কেসিআর সলতে পাকানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন জোর কদমে। রবিবার মমতার সঙ্গে দেখা করার আগের দিন তিনি দেখা করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী বিজু জনতা দলের নেতা নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে। মমতার অবস্থান স্পষ্ট না হলেও শোনা যাচ্ছে তেলঙ্গানায় জয়ের জন্য কেসিআরকে তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন। এরপর কেসিআর দেখা করবেন বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী ও এসপি সভাপতি অখিলেশের সঙ্গে। আঞ্চলিক দলগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে কেসিআর কি পারবেন বিজেপি ও কংগ্রেসকে ঠেকাতে?
বিধানসভায় নির্বাচনে তিনি রাহুলের জোটকে ধাক্কা দিয়েছেন। কিন্তু মনে রাখা দরকার বিধানসভা আর লোকসভার ইস্যু এক নয়। তাই লড়াইয়ের ধরণও এক হতে পারে না। এছাড়া কেসিআর ও নায়ডুর সম্পর্কও খুব ভালো নয়। অথচ তাঁরা ২ জনেই বিজেপি বিরোধী।
স্ট্যালিনের আগে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে রাহুলের নাম প্রস্তাব করায় মমতা উষ্মা প্রকাশ করতে দেরি করেননি। তিনি বলেন, এই বিষয়টি ঠিক হবে লোকসভা ভোটে ফল প্রকাশের পর। জোট জটিলতা তুঙ্গে। চলছে অঙ্কের হিসেব। চলছে জল মাপার কাজ। ফলে জোট সমীকরণ কোন দিকে গড়ায়, সেটাই এখন দেখার। সময়ই বলে দেবে শেষপর্যন্ত কে কোন দিকে ভিড়ল। নজর থাকবে।