আজ বিকেল: ইচ্ছে ছিল ব়্যাংক করার, কিন্তু সে সাদ পূর্ণ না হলেও মাধ্যমিকে ভালই ফল করল নাগেরবাজারের কৌশিক দাস। স্থানীয় কৃষ্ণকুমার হিন্দু অ্যাকডেমির ছাত্র কৌশিক ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। নিতান্তই দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের সন্তান সে, খুব কাছে থেকে দারিদ্র্যেক প্রত্যক্ষ করেছে। চিকিৎসার অভাবে নিম্নবিত্ত পরিবারে মৃত্যুর ঘটনা তাকে ব্যথিত করে, তাইতো পড়াশোনা করে ডাক্তার হয়ে গরীবের দুঃখ ঘোচাতে চায় কৌশিক। এদিকে গেঞ্জি সেলাই করা বাবা-মা জানেন না, কোথা থেকে আসবে পড়ার টাকা।
অনেক কষ্টে মাধ্যমিকের খরচ চালিয়েছেন, ইচ্ছে থাকলেও ছেলের জন্য বেশি গৃহশিক্ষক রাখতে পারেননি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রবীর মণ্ডল ছেলেকে সমস্ত রকমের সাহায্য করেছেন। বর্তমানেও করছেন। সামনেই স্কুলে ভর্তির দিন, প্রবীরবাবু ওই দিন নির্দিষ্ট সময়ে কৌশিককে স্কুলে পৌঁছে যেতে বলেছেন। ডাক্তার হতে গেলে বিজ্ঞান নিয়েই পড়তে হবে, কিন্তু এত টাকা আসবে কীকরে, তানিয়ে চিন্তায় ঘুম উড়েছে দাস পরিবারের। ছেলের জন্য সরকারি সহযোগিতার চেষ্টা করছেন তাঁরা। স্কলারশিপের সন্ধান পেলেই আবেদন করে দেবেন। প্রবীরবাবু জানান, মাধ্যমিকে ৯৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছে নিম্নবিত্ত পরিবারের কৌশিক। বেবেছিল ব়্যাংক করবে, তবে সে আশ াপূর্ণ না হলেও ফল ভালই করেছে। ওকে সবদিক থেকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি।
দমদমের পশ্চিম রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা কৌশিের প্রাপ্ত নম্বর ৬৫১। অঙ্কে সে পেয়েছে ৯৮, ইংরেজিতে ৯৫, বাংলায় ৮৫, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৪, জীবন বিজ্ঞানে ৯৫, ইতিহাসে ৯০, ভূগোলে ৯৪ নম্বর। অবসর কাটে নেতাজি সুভাষ, রবীন্দ্রনাথের জিবনী পড়ে মাঝেমদ্যে ছবিও আঁকে সে। আর মাধ্য়মিকের প্রস্তুতিতে টেক্সটবই খুঁটিয়ে পড়া তার মূল লক্ষ্য ছিল। সেলফ স্টাডি বেশি করেছে। এদিকে এখন থেকেই মেজিক্যালের প্রবেশিকার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে। ২৮ তারিখ স্কুলে উচ্চমাধ্যমিকের ভর্তিটা হয়ে গেলেই একটা চিন্তা থেকে স্বস্তি মেলে। বাবা-মায়ের এই পরিশ্রমকেই পাথেয় করতে চায় কৌশিক। তাঁদের জন্য ভাল কিছু যে তাকে করতেই হবে।