‘মমতা দি বলেন হবে না, কী হবে না? এপ্রিলে সব হবে’, রাজ্যে এসে সুর চড়ালেন নাড্ডা

‘মমতা দি বলেন হবে না, কী হবে না? এপ্রিলে সব হবে’, রাজ্যে এসে সুর চড়ালেন নাড্ডা

শিলিগুড়ি:  ২১-এর নির্বাচনের আগে মূলত সংগঠনকে জোড়দার করতেই উত্তরবঙ্গ সফরে এলেন বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা৷ সোমবার শিলিগুড়িতে সামাজিক সমুহ বৈঠক থেকে আরও একবার রাজ্য থেকে তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করার ডাক দিলেন তিনি৷ তুলোধোনা করলেন তৃণমূল সরকারকে৷ 

আরও পড়ুন- বিলি হবে ত্রাণ! পরিযায়ী ‘উমা’র কষ্ট তুলে ধরবে বেহালার পুজো মণ্ডপ

এদিন নাড্ডা বলেন, দিওয়ালি ও ছট পর্যন্ত দেশের মানুষের জন্য বিনা মূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার৷ ১০ কোটি কৃষকের জন্য প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ এর মধ্যে  ৮ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই এই সুবিধা পেয়ে গিয়েছেন৷ কিন্তু বাংলায় এই প্রকল্প লাগু হতে দেয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার৷ বাংলার ৭৬ লক্ষ কৃষককে এই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে৷ সেই সঙ্গে তাঁর প্রতিশ্রুতি, বাংলায় বিজেপি সরকার এলে এক মাসের মধ্যেই এ রাজ্যে কৃষক সম্মান নিধি চালু করা হবে৷ 

তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পকেও এ রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হয়নি৷ দেশের ৫৫ কোটি মানুষের কাছে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প পৌঁছে দেওয়া হয়েছে৷ কোনও জাত-পাতের ভিত্তিতে নয়, কাজের ভিত্তিতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে প্রতি বছর চিকিৎসার জন্য ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত৷ নাড্ডা বলেন, ‘‘আয়ুষ্মান প্রকল্পের কথা তুললেই মমতাজি বলেন হবে না৷ কী হবে না? হবে৷ এপ্রিল মাসে সব হবে৷ প্রথমে আপনি পদ্মে ভোট দেবেন৷ তার পর আমরা আয়ুষ্মান ভারত আনব৷’’

আরও পড়ুন- হাইকোর্টের নির্দেশে দর্শকশূন্য মণ্ডপ, কী বললেন রাজনৈতিক নেতারা?

তিনি আরও বলেন, আগে ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না৷ এর মধ্যে এক হাজার গ্রাম ছিল পশ্চিম বাংলার৷ কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পর ২২ কোটি মানুষের ঘরে আলো পৌঁছে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ এই  জমানায় প্রতিটি আধিকারিককে কাজ করতে হয়েছে৷ প্রত্যেক ক্যাবিনেট বৈঠকে মোদীজি বারবার গ্রামগুলির উন্নয়নের খবর নিয়েছেন৷ তিনি বলেন, এক সময় বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে গেলে অফিসারদের তোয়াজ করতে হত৷ কিন্তু মোদী জমানায় অফিসাররা নিজে গিয়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়৷ ফর্ম পূরণের পাঁচ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ পৌঁছনো হয়৷ 

এছাড়াও তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ২০ কোটি মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তিন মাসে ৫০০ টাকা করে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে৷ আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পে ১ লক্ষ কোটি টাকা শুধুমাত্র ফার্মার প্রোডিউসার্স অর্গানাইজেশন তৈরি করার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে৷ এই সংস্থা কৃষকের উন্নতি সাধনের জন্য নিজেদের গ্রামে যে বিকাশমূলক কাজ করাতে চায়, তা এই টাকা থেকে খরচ করা হবে৷ কোল্ড স্টোরেজ থেকে জেনারেল স্টোরেজ সব কিছুই তৈরি করা হবে৷ সেই সঙ্গে তাঁর আর্জি, আপনাদের লোকালের জন্য ভোকাল হতে হবে৷ ওয়ার্ল্ড ব্যান্ডিং করানোর দায়িত্ব সরকারের৷ পশ্চিমবাংলার স্থানীয় দ্রব্যের তালিকা তৈরি করে একটা রোড ম্যাপ তৈরি করার নির্দেশও দেন দলীয় সাংসদদের৷ সেই সকল পণ্যকে আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের অধীনে ওয়ার্ল্ড ব্র্যান্ডিং করা হবে বলেও জানান নাড্ডা৷ 

তিনি জানান, শ্রমিক আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ এর ফলে সুক্ষিত হবে রাজ্যের চা শ্রমিকরাও৷ সিএএ বিলও পাশ হয়ে গিয়েছে৷ গোর্খা জনজাতিকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে৷ ক্ষমতায় এলে যদুবংশীদের সমস্যাও দূর করা হবে৷ বিভিন্ন উপজাতিদের দাবি পূরণ করা হবে৷ মেডিসিন হাব গড়ে তোলা হবে৷ বিজয়া দশমীর উত্তরবঙ্গে রেল নিয়ে যাবতীয় সমস্যার সামাধানও করা হবে৷ 

আরও পড়ুন – BIG BREAKING: পুজোর মণ্ডপে নো-এন্ট্রি, হবে দর্শকশূন্য, রায় ঘোষণা হাইকোর্টের

তৃণমূল সরকারকে একহাত নিয়ে নাড্ডা বলেন, রাজ্যে কোনও সংগঠনকে টাকা দেওয়া হচ্ছে৷ কাউকে বলা হচ্ছে নির্দিষ্টি দাবি থেকে সরে আসতে, আবার কাউকে বলা হচ্ছে দাবি তুলে নিতে৷ যারা চার বছর কোনও কাজ না করে পঞ্চম বছরে লোভনীয় প্রতিশ্রুতি দেয়, এটা তাদেরই কাজ৷ আর এই কাজ করে একমাত্র তৃণমূল৷ বিজেপি যা বলে তা করে দেখায়৷ বিজেপি সামজকে জুড়ে রাখে, আর তৃণমূল সমাজকে ভাঙে৷ ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতি করে তৃণমূল৷ এতদিন হিন্দুদের প্রতি অনেক অবিচার করেছে৷ এখন ভুল বুঝে সকলকে জোড়ার চেষ্টা শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *