কলকাতা: বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার ডায়মন্ডহারবার সফরকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার শিরাকোলে৷ তাঁর কনভয় লক্ষ্য করে চলল হামলা৷ নাড্ডার গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয় লাঠি, পতাকা লাগানো দাণ্ডা৷ পিছনের দিকে থাকা গাড়িগুলির উপর চলে ইঁট বৃষ্টি৷ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক আজকের ঘটনার তীব্র নিন্দা করলেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাস তালুক ভবানীপুর ও ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্র অরজকতার, অসহিষ্ণুতার, বিশৃঙ্খলা আর অনুন্নয়নের শ্রষ্ঠ কেন্দ্র করে কটাক্ষ করলেন তিনি৷ তাঁর কথায়, এই দুটি জায়গাই দুর্নীতির কেন্দ্র হয়ে উঠেছে৷ ডায়মন্ডহারবারে কোনও উন্নয়ন নেই৷ ভবানীপুরের বাড়গুলিতে জলের ব্যবস্থা নেই৷ মাফিয়ারা ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ নাড্ডা বলেন, আজকের ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, রাজ্যে কোনও আইন শৃঙ্খলা নেই৷ অরজকতা চলছে৷ অসহিষ্ণতার রাজনীতি চলছে৷
আরও পড়ুন- বেকারত্ব সরিয়ে রাজ্যজুড়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ, ভোটের মুখে ঘোষণা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের
বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, সারা বিশ্বকে পথে দেখানো বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে রাজনীতি করছেন তা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর৷ আজ আটজন কর্মী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন৷ বাংলার এই সন্তানদের সঙ্গে রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি৷ তিনি বলেন, বুলেটপ্রুফ গাড়ির জন্য আমি রক্ষা পেয়েছি৷ কিন্তু কৈলাস বিজয়বর্গীয় বাম হাতে চোট পেয়েছেন৷ তাঁর গাড়ির একটি কাঁচও অবশিষ্ট নেই৷ মুকুল রায়, অনুপম হাজরার গাড়ি আক্রান্ত হয়েছে৷ রাজনৈতিক বিদ্বেষ চলছে৷ বাংলায় আইনের শাসন নেই৷ এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না৷ বাংলার মানুষ ভয়ের মধ্যে রয়েছে৷ মমতা সরকারের রাজনীতি গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছে৷ এটাই কি রবীন্দ্রনাথ, শ্যামাপ্রসাদের বাংলা? প্রশ্ন তোলেন তিনি৷ নাড্ডা বলেন, মমতাজি যে ভাষায় কথা বলেন সেটা তাঁর সংস্কারের পরিচয়৷ মমতাজি প্রধানমন্ত্রীর জন্য যে শব্দ প্রয়োগ করেন তা বাংলার সংস্কৃতি নয়৷ মুখ্যমন্ত্রী পদের গৌরব সম্পর্কে উনি অজ্ঞাত৷ আসন্ন নির্বাচনে মানুষ মমতাজিকে বিদায় জানাবে৷ ২০০-র বেশি আসনে জিতবে বিজেপি৷
তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা চলছে৷ ১০০ জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে৷ নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই এখানে সুরক্ষিত নয়৷ তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে? সিন্ডিকেট, তোলাবাজি চলছে৷ শেষকৃত্যেও কাটমানি দিতে হচ্ছে৷ কোভিডেও দুর্নীতি হয়েছে৷ রেশন চুরি হয়েছে৷ আম্পানে দুর্নীতি হয়েছে৷ আম্পানের টাকা গিয়েছে তৃণমূলের পকেটে৷ তৃণমূলকে চাল চোর, ত্রিপল চোর, রেশন চোর সরকার বলেও তোপ দাগেন নাড্ডা৷ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত বাংলার মানুষ৷ প্রতিটি রাজ্যে পারিবারিক দলকে সরতে হয়েছে৷ এখানেও পারিবারিক দলকে মানুষ বিদায় জানাবে৷
আরও পড়ুন- ‘সব কাজ আমার করে দেওয়া আছে, বিজেপি শুধু ঘেউ ঘেউ করছে’, হুঙ্কার মমতার
প্রত্যয়ের সঙ্গে নাড্ডা বলেন, আজকে যে ঘটনা ঘটেছে, হাজার বার তার পুনরাবৃত্তি হলেও প্রতিটি কেন্দ্রে আমরা যাব৷ আমাদের বহিরাগত বলে যতই চিৎকার করুন, বাইরের ভোটে আমরা জিতব না৷ বাংলার মানুষই আমাদের জয়ী করবে৷