কলকাতা: নিজের জীবনকে বাজি রেখে মোবাইল হেডফোন কানে দিয়ে রেললাইন পার হওয়া দুই তরুণীর প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুশয্যায় নৈহাটির ৬ নং বিজয়নগর অঞ্চলের বাসিন্দা জীবনকুমার সরকার। তাঁকে বাঁচাতে হলে এই মুহূর্তে ২০ লক্ষ টাকা দরকার, যা এই মুহূর্তে তাঁর পরিবারের পক্ষে জোগাড় করা অসম্ভব। জীবনবাবু নৈহাটির ৬ নং বিজয়নগর অঞ্চলে কেক বিস্কুটের একটি ছোট্ট দোকানের মালিক।
গত ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে শ্যামনগরে দিদির বাড়ি গিয়েছিলেন জীবনবাবু। বিকেলে বাড়ি ফিরবেন বলে শ্যামনগর স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। সেই সময় মোবাইলের হেডফোন কানে দিয়ে রেললাইন পেরোচ্ছিলেন দুই তরুণী। আপ লাইন দিয়ে ধনধান্য এক্সপ্রেস ঢুকছিলো। ট্রেনটি ওই স্টেশনে থামে না। ফলত বেশ দ্রুতগতিতেই ঢুকছিলো। কানে হেডফোন থাকায় শুনতে পাননি ওই তরুণীরা। অনেকে চিৎকার করলেও শুনতে পাননি ওই তরুণীরা। ট্রেনটি প্রায় যখন ঘাড়ের ওপর এসে পড়েছে, তখন নিজে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদের ঠেলে লাইন থেকে সরিয়ে দেন, কিন্তু নিজে আর সরতে পারেননি। ট্রেনের ধাক্কায় একটু দূরে ছিটকে পড়ে জ্ঞান হারান জীবনবাবু।
গত এক মাস ধরে ই এম বাইপাসের লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন। বিলের অঙ্ক ২৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে। যাদের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে জীবনবাবুর এই অবস্থা, সেই দুই তরুণীর খোঁজ পাওয়া যায়নি আজও। হাসপাতালের বিল হয়েছিল ৩৯ লক্ষ টাকা পরিবারের লোকেরা ৮-৯ লক্ষ টাকা জোগাড় করেছিলেন। সংবাদপত্রে খবর দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন অনেকে, উঠে এসেছিল ১৮ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা। তার পরেও ১০ লক্ষ টাকা জোগাড় হয়নি। হাসপাতাল কতৃপক্ষ শেষঅবধি ওয়ি টাকা মকুব করে দেন, জীবনবাবুর সাহসিকতাকে সম্মান জানিয়ে। চিকিৎসা এখনও বাকি।