কলকাতা: কাস্তে-হাতুড়ি ও জোড়াফুলের পর মহাগুরু এবার পদ্মফুলে৷ রবিবার বিজেপির ব্রিগেড সমাবেশে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখালেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তাঁর এই জার্সি বদল নিয়ে তৃণমূল নেতারা যথেষ্ট বিক্ষুব্ধ হলেও কিছুমাত্র আশ্চর্য হননি মহাগুরুর একসময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সিপিআইএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তী৷ বলেছেন, “হয়ত চাপের মধ্যে মিঠুনকে এমন কাজ করতে হচ্ছে৷ কেন মিঠুনকে বিজেপিতে যেতে হল সেই প্রশ্নের উত্তর ও হয়ত পরে পাবে, এখন নয়৷”
মিঠুন চক্রবর্তী। বাংলার গর্ব, বাঙালির মহাগুরু৷ অভিনয় জীবনের প্রথম থেকেই তার বাম-যোগ বাঙালির কাছে সুপরিচিত ছিল৷ বাম জমানায় বেশ কয়েক বছরের জন্য তিনি রাজ্যের তথ্য ও প্রযুক্তি দফতরের উপদেষ্টাও ছিলেন৷ সিপিআইএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলেন মিঠুন৷ একেবারে পারিবারিক সম্পর্ক যেমন হয় আর কি৷ কিন্তু বাম জমানা যখন শেষের পথে, তখন সিপিআইএম ছেড়ে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ হন মহাগুরু। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একাধিক সমাবেশ ও মিছিলে তাকে দেখা যায়৷ কিন্তু রবিবার সেই জোড়াফুলও ত্যাগ করে গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নিলেন মিঠুন৷
তবে তার এই জার্সি বদলে খুব একটা অবাক নন মিঠুনের একসময়ের বন্ধু সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তী৷ তিনি জানিয়েছেন, “ক্ষ্যাপা খুঁজে ফেরে পরশ রতন৷ মিঠুনের আগে তৃণমূলে গিয়ে ভেবেছিল পরশ রতন খুঁজে পাবে৷ কিন্তু পাইনি৷ এবার নতুন দলের গিয়েছে৷ মিঠুনের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ছিল৷ প্রত্যেক মানুষেরই স্বাধীন চিন্তার জায়গা রয়েছে৷ যে যার মত চিন্তা করতে পারে৷ কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই অনেক রকম চাপ থাকে৷ বাইরে থেকে দেখলে সেগুলি বোঝা যায় না৷ ও হয়ত বারবার এক্সপেরিমেন্ট করছে৷ সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই বদলে যায়৷ একদিন ও নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারবে৷ কেন ওকে বিজেপিতে যেতে হল সেই প্রশ্নের উত্তর একদিন ও পাবে৷”
কিন্তু মিঠুনের এই দলবদল একেবারেই মেনে নিতে পারেননি তৃণমূলের নেতারা৷ কামারহাটির তৃণমূল প্রার্থী তথা তৃণমূল নেতা মদন মিত্র সরাসরি বলেছেন, “জলঢোঁড়া না হলে মোদির পায়ে গিয়ে মাথা ঠেকাতেন না মিঠুন।” অন্যদিকে তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, “মিঠুনদা কখন কার সাথে থাকেন তা বোঝা মুশকিল৷ এর আগে প্রথমে সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে ছিলেন, তারপরে উনি আমাদের সঙ্গে এলেন৷ আর এখন বিজেপিতে গিয়ে যোগ দিয়েছেন৷ এরপরে হয়ত অন্য কারও সঙ্গে থাকবেন৷”