নুসরত কেন্দ্রে ‘ভুখা’ বৃদ্ধের আর্তনাদ! অবশেষে পর্দাফাঁস পুলিশের

নুসরত কেন্দ্রে ‘ভুখা’ বৃদ্ধের আর্তনাদ! অবশেষে পর্দাফাঁস পুলিশের

8a1ea4e385e79502f55bcbac2b1e00df

কলকাতা: চোখ রাঙাচ্ছে করোনা৷ লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা৷ মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের অর্থনীতি৷ আর এই মহামারীর পরিস্থিতির মধ্যে লাফিয়ে বাড়ছে গুজব৷ বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে ভুয়ো ভিডিও৷ পিছিয়ে নেই বাংলা৷ রেশন না পাওয়ার অভিযোগ তুলে, সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে এক বৃদ্ধের আর্তনাদ করতে দেখা গিয়েছিল৷ ওই ব্যক্তি দাবি করেন, গত দু’দিন ধরে তিনি অভুক্ত৷ ওই ব্যক্তির আর্তনাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই মাঠে নামে পুলিশ৷ তদন্ত নেমে এবার গোটা ঘটনার পর্দা ফাঁস করল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ৷

রাজ্য পুলিশের তরফে টুইটার পেজে জানানো হয়েছে, ‘উত্তর ২৪ পরগনার যাত্রাশিল্পীকে দিয়ে বাংলার রেশন সংক্রান্ত সম্পূর্ণ ভুল তথ্য প্রয়োগ ও পরিবেশন৷ তাঁর ডিজিটাল রেশন কার্ড আছে এবং গত ২ এপ্রিল, ২০২০-তে তিনি রেশন সংগ্রহও করেছেন৷ দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে৷ সাবধানে থাকুন৷ দায়বদ্ধ থাকুন৷’’ ওই টুইট বার্তায় রাজ্য পুলিশের তরফে ‘ওয়েস্টবেঙ্গল বিজেপি’ নামের টুইটার অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত ভিডিওটি একটির ছবিও প্রকাশ করা হয়৷ অভিযুক্ত ওই যাত্রাশিল্পী আটক করা হলেও ভুয়ো ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে ‘ওয়েস্টবেঙ্গল বিজেপি’ বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, বা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়৷ রাজ্য পুলিশের টুইটার অ্যাকাউন্টে ওই যাত্রাশিল্পীর রেশনকার্ড-সহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের রেশন কার্ডের ছবিও তুলে ধরা হয়েছে৷

রাজ্য পুলিশের টুইটারে প্রকাশিত একটি ভিডিও ওই যাত্রাশিল্পী পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘‘আমার নাম মোবারক মণ্ডল৷ আমার বাড়ি বেগমপুরে৷ আমি সরকারি রেশন পাই৷ আমার কোন অভিযোগ নেই৷ আমি আগে যাত্রা করতাম৷ কয়েকটি ছেলে বলেছিল, কাকা লকডাউনের মধ্যে খেতে পারছে না বলে একটু অভিনয় করে দেখাও৷ তো আমি দেখালাম৷ কয়েকটা ছেলে সেটা পোস্ট করেছিল৷ আমার কোন অভিযোগ নেই৷’’ এরপর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফে ভুয়ো খবর যাতে না ছড়ানো হয় তার বার্তাও দেওয়া হয়৷ জানানো হয়, এই ধরনের গুজব ছড়ালে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷

একটি ভিডিও প্রকাশ করে ‘পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি’র ফেসপুক পেজে দাবি করা হয়, ‘‘শুনতে পাচ্ছ কি মানুষের কান্না! তৃণমূল রেশন লুট বন্ধ করুন!’’ ভিডিওয় দেখা যায়, এক বৃদ্ধের হাহাকার৷ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর করুন আর্তি ছিল, ‘‘মা আমাদের বাঁচান৷’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরা আপনাদের সন্তান৷ আমাদের একটু দেখুন৷ আমরা দু’দিন ধরে কিছু খাইনি৷ আমরা আর সহ্য করতে পারছি না৷ আর খেতে দিতে না পারলে আমাদের গুলি করে মেরে ফেলুন৷’’ তিনি একই আবেদন জানিয়েছেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান এবং সিপিএম বিধায়ক রফিকুল ইসলামের কাছেও৷

ভাইরাল ভিডিওটিতে মুখে মাস্ক পড়ে স্থানীয়দের বড় অংশ জমায়েত করেছেন বেলে দেখা যায়৷ কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে নকডাউন বিধি ভেঙে কীভাবে জমায়েত করেন স্থানীয়রা৷ সেই বিষয়টি প্রশাসনের অজানা ছিল? আর মহামারীর পরিস্থিতিতে এহেন ভুয়ো ভিডিও কীভাবে ছড়িয়ে পড়ল? উঠছে প্রশ্ন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *